প্রিন্ট এর তারিখঃ সোমবার ৭ই জুলাই, ২০২৫ ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ ১১ই মহর্‌রম, ১৪৪৭

বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ড. মিজানুর রহমানের মহতী উদ্যোগে বদলে যাচ্ছে চিকিৎসা সেবা

বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ড. মিজানুর রহমানের মহতী উদ্যোগে বদলে যাচ্ছে চিকিৎসা সেবা । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অর্থোপেডিক, চক্ষু, চর্ম,যৌন, শিশু, নাক-কান গলা ও হৃদ রোগ-বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো আজও সৃষ্টি করা হয়নি। এছাড়া হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় ও আয়ার পাঁচটি পদের সবগুলোই শূন্য। পাঁচটি পদের বিপরীতে পরিচ্ছন্নতাকর্মী আছে মাত্র ১ জন। আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নেওয়া কয়েকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী তারা বিষয়টি দেখভাল করেন। অন্য দিকে, সিজার অপারেশন বন্ধ থাকায় গর্ভবতী মায়েরা ডেলিভারির সময় হাসপাতালে ভর্তি হতে সাহস করেননা । কিন্তু তারা নিয়মিত ৪ বার হাসপাতালে  চেকআপ করাতে আসেন । ২০২১ সালের ১ লা এপ্রিল হাসপাতালে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি যোগদানের পর থেকে অসংখ্য পদ শুন্য থাকার পরেও শতভাগ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়নি উপজেলা বাসি। তার যোগ্য নেতৃত্বে হাসপাতালের পরিবেশ সম্পুর্ন বদলে গেছে। প্রতিদিন তার রুমের সামনে শত শত নারী পুরুষ লাইন দিয়ে দাড়িয়ে থাকে শুধু টিএইচও’র কাছ থেকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য।সুত্রে প্রকাশ,বটিয়াঘাটা হাসপাতালটি ২০১৪ সালে অপারেশন থিয়েটার বা ওটি চালু হয়। তবে সেই থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব ধরনের অস্ত্রোপচারই বন্ধ ছিল। ২০২২ সালের মার্চ মাসে অস্ত্রোপচার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকলেও অ্যানেসথেসিয়ায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসা কর্মকর্তা শামীম রহমান দায়িত্ব পালন করতেন। তবে চলতি বছর মার্চে তাকে শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে বদলি করা হয়। এতে আবার অস্ত্রোপচার কার্যক্রম থমকে দাঁড়ায়।হাসপাতালে গত জানুয়ারি থেকে আগষ্ট পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার ৯৬৩ জন রোগী বহির্বিভাগে সেবা নিয়েছেন। অর্থাৎ মাসে গড়ে  সাড়ে ৫ হাজার রোগী বহির্বিভাগে সেবা নেন।রোগীদের সঙ্গে আলাপ কালে গত ২২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত বিভিন্ন সমস্যার কথা জানা যায়। হাসপাতালটিতে একটি পুরোনো দ্বিতল ভবন ও একটি নতুন তিনতলা ভবন আছে। পুরোনো দ্বিতল ভবনটিতে কোনো রোগী রাখার ব্যবস্থা নেই। ভবনটি কিছুটা সংস্কার করে প্রশাসনিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয়, ফার্মেসি ও সম্মেলন কক্ষ করা হয়েছে। চিকিৎসা নেওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষের সামনে রোগীর দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। ১৯ শয্যার নতুন ভবনে সব রোগী রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে,বারান্দা ও সিঁড়িতে  শয্যা পাতা হয়েছে। নতুন ভবনে দোতলায় হাসপাতালের অস্ত্রোপচারের কক্ষটি তালাবদ্ধ। ওটি ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স সুনেত্রা বিশ্বাসের সহযোগিতায় তালা খোলা হয়। দেখা যায়, অস্ত্রোপচারের জন্য সব সরঞ্জাম রয়েছে। পাশে পোস্ট অপারেটিভ কক্ষটিও সুসজ্জিত। তবে হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের কোনো ব্যবস্থা নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বটিয়াঘাটা হাপতালটি বিগত ০১-০১-১৯৭৬ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালে ৫০ শয্যার অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। কিন্তু  অদ্যাবধি জনবলের অনুমোদন না পাওয়ায় ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে ৫০ শয্যার সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।  ৫০ শয্যা অনুযায়ী জুনিয়র কনঃ এর পদ সংখ্যা হবে ১০টি, সহকারী সার্জন বা সমমান এর পদ সংখ্যা হবে ১১টি অন্যান্য পদে মিলিয়ে মোট ২৪ জন প্রথম শ্রেনীর পদ হবে। কিন্তু বর্তমানে ৩১ শয্যার জনবলের তথ্যঃ-জুনিয়র কনঃ এর বর্তমানে পদ আছে ৪ টি সেখানে ৩ টি শুন্য অথচ আছে ১ জন।জুনিঃকনঃ সার্জারী এবং জুনিঃ কনঃ এ্যানেন্থেসিয়া পদ শূন্য আছে। উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারের পদ ৭টি, কর্মরত ৭জন, কিন্তু ২ জন দীর্ঘদিন যাবত ডেপুটেশনে অন্যত্র কর্মরত আছে। অফিস শাখার পরিসংখ্যানবিদ, ষ্টোর কিপার, অফিসহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক এবং জুনিয়র ম্যাকানিক পদ শূণ্য রয়েছে। ক্লিনিং শাখার ওয়ার্ড বয় এর পদ ৩টি পদের সবগুলোই শুণ্য। আয়া ২টি পদের সবগুলোই শূণ্য। মালী ১ পদের ১ টিই শূণ্য।সুইপার – ৫ টি পদের মধ্যে ৪ টি শুন্য আছে ১ জন । নিরাপত্তা প্রহরী ২ টি পদের মধ্যে ১ টি শূণ্য রয়েছে।  বর্তমানে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে ৫০ শয্যার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, অতিসত্ত্বর ৫০ শয্যার জনবলের অনুমোদন এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যাক জনবল পদায়ন প্রয়োজন। বটিয়াঘাটার সুরখালী  ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম ( ৬২) বুকে-পিঠে ব্যথা নিয়ে আট দিন ধরে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন ডাঃ মিজান স্যার রাউন্ডে আসেন । এখানে খাওয়া দাওয়াও ভালো। শুধু কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাইরে থেকে করতে হয়েছে। তবে প্রতিদিন ১/২ বার ডাক্তাররা খোঁজ খবর নেন। ভগবতিপুর গ্রামের অনিল মন্ডল ( ৬৪) বলেন,আমি মিজান স্যারের কাছে ২/৩ দিন দেখাইছি,হাসি মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বলে মাথায় হাত দিয়ে বলে এই ঔষধ ঠিকঠাক ভাবে খান সুস্থ হয়ে যাবেন। তার ব্যবহারে আমি অর্ধেক সুস্থ হয়ে গেছি ।সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, ‘অস্ত্রোপচার কক্ষ চালু করতে পারলে মানুষ উপকৃত হতো। অবেদনবিদ না থাকার পরও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক দিয়ে অস্ত্রো পচার কক্ষ চালু করেছিলাম। সেই চিকিৎসককে মার্চে বদলি করা হয়েছে। গুরুত্বের বিবেচনায় তাঁকে এখান থেকে না নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। জনবল সংকটের বিষয়টি প্রতি মাসের প্রতিবেদনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, একটি কুচক্রী মহল হাসপাতালের সুনাম নষ্ট করার জন্য মিডিয়া কর্মীদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অসত্য সংবাদ প্রকাশ করছেন। আমি উক্ত সংবাদের নিন্দা জানাই। আমি এখানে যোগদানের আগের চিত্র এবং বর্তমান সময়ের চিত্র একটু বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করছি। সাধারণ রোগিরা জানান,সুনেছি এ হাসপাতালে অনেক জনবল নেই তারপরও হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।

সম্পাদকঃ মোঃ আনছারুজ্জামান (রেজুয়ান ইসলাম) এম.এ (01711420076 অথবা 01717-934449),প্রকাশক: মো: রাজিবুল করিম রোমিও,বার্তা সম্পাদক: মো: ফারুক হোসাইন,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ফলিয়া দিগর (বটতলা) বাজার,কামালেরপাড়া,সাঘাটা,গাইবান্ধা।      

প্রিন্ট করুন