প্রিন্ট এর তারিখঃ বুধবার ৮ অক্টোবর, ২০২৫ ২৩ আশ্বিন, ১৪৩২ ১৫ রবিউস সানি, ১৪৪৭

বাঁচতে চায় নাইমুল কিডনি বিকলে ভেঙে পড়েছে স্বপ্নভরা এক পরিবার

মো: রাজিবুল ইসলাম বাবু

নাটোর প্রতিনিধিঃ নাইমুল কবির ইসলাম নাইম (৩১)এক সময় যে তরুণের চোখে ছিল নিজের পায়ে দাঁড়ানোর স্বপ্ন, আজ সে জীবনের জন্য লড়ছে মৃত্যুর সঙ্গে। ২০২৩ সালে ঢাকায় প্রথম চাকরি শুরু করেছিলেন নাইমুল। পরিবারে তখন নতুন আশার আলো জ্বলেছিল।সবাই ভেবেছিল, এবার হয়ত পরিবারে শুরু হবে সুখের দিন। কিন্তু সেই হাসি মুছে যেতে সময় লাগেনি। কয়েক মাস না পেরুতেই হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। বমি, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা করে জানা যায়, তাঁর দুটি কিডনিই বিকল হয়ে যাচ্ছে। এরপর থেকেই শুরু হয় এক ভয়ংকর বাস্তবতার সঙ্গে যুদ্ধ। নিয়মিত চিকিৎসা, ওষুধ আর মাসে তিনবার ডায়ালাইসিস সবকিছুর খরচ সামলাতে গিয়ে একসময় স্বচ্ছল থাকা পরিবারটি এখন চরম আর্থিক সংকটে। ধার-দেনা, বন্ধক, ঋণে সবই শেষ।
নাইমুল নাটোরের বাগাতিপাড়া পৌরসভার সোনাপাতিল মহল্লার নজরুল ইসলাম (৫২) ও লিপি খাতুন (৪৬) দম্পতির একমাত্র ছেলে। বাবা নজরুল ইসলাম এখন বেকার, মা লিপি খাতুন প্রতিদিন ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে অশ্রু ফেলেন। অর্থের অভাবে মাসে তিন বারের জায়গায় এখন দুইবার ডায়ালাইসিস করাতে পারছেন তাও ধার করে। একদিন হয়তো সেই পথও বন্ধ হয়ে যাবে, যদি সমাজ এগিয়ে না আসে। নাইমুল ২০১৮ সালে মাস্টার্স পাস করেছিলেন। নিজের চেষ্টায় গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন পরিবারটিকে। কিন্তু আজ তাকে বেঁচে খাকতে হচ্ছে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জালড়ে। এখন তার প্রয়োজন সবার একটু সহানুভূতি, একটু সহযোগিতা। হয়তো সবার ছোট্ট সাহায্যটাই ফিরিয়ে দিতে পারে এক তরুণের বেঁচে থাকার আশা, এক মায়ের মুখের হাসি।
নাইমুল ইসলাম নাইম জানান, আগে তিনি পাঁয় ওয়াক্ত মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তেন কিন্তু এখন আযান কানে আসে কিন্তু মসজিদে যেতে পারেন না।বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। তিনি স্বাভাবিক জীবনে যেতে চান।আগে বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করারেও এখন তিনি সরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করাচ্ছেন।ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তিনি চিকিৎসা করিয়েছেন।আর্থিক অনটনে জীবনের একটু প্রদীপ জ্বালানোর জন্য সবার সহোযোগিতা চান নাইম।
নাইমুলের পিতা নজরুল ইসলাম বলেন,তিনি কষ্ট করেও হলেও ছেলেকে আর দশটা সন্তানের মতোই শখে-আহ্লাদে বড় করেছেন। বাইরে রেখে পড়াশোনাও করিয়েছেন।ছেলে নিজ পায়ে দাঁড়াতে যাচ্ছিল ঠিক সেই সময়ই এই বিপর্যয় নামে তাদের সুখের সংসারে। বাবা হিসেবে এই কষ্ট সহ্য করার মতো নয়। চিকিৎসার জন্য যা ছিল সব উজার করে দিয়েছেন তিনি। এই চিকিৎসা খুব ব্যয়বহুল, আর এখন তিনি নিঃস্ব। এখনও পর্যন্ত কারো কাছে সাহায্যের কথা বলেননি তিনি। কিন্তু এখন আর উপায় রা থাকায় দেশবাসীর কাছে তার সন্তানের জন্য দোয়া ও সাহায্য চাইছেন তিনি।
মা লিপি খাতুন কান্না ভেজা কণ্ঠে বলেন, তিনি ও তার পরিবার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন ছেলেকে বাঁচানোর জন্য। চিকিৎসা চলছে কিন্তু কোন উন্নতি নেই, বরং দিন দিন অবনতি হচ্ছে। তার বাবার যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেছে, এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।তার একটাই সন্তান,তিনি শুধু চান সে বেঁচে থাকুক। বাবা-মায়ের চোখের সামনে চিকিৎসার অভাবে একটা সন্তানকে হারিয়ে যেতে দেখা কোনো বাবা-মায়ের পক্ষে সহ্য করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন,ছেলে এখন খেতে পারে না,পেট ফুলে থাকে,দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না, খুব শ্বাসকষ্ট হয়। শ্বাস নিতে কষ্ট হলে মনে হয় দম বন্ধ হয়ে যাবে। তাকে সপ্তাহে দুইদিন ডায়ালাইসিস করাতে হয়, কিন্তু ডাক্তার বলেছেন তিনদিন করালে ভালো থাকবে কিন্তু তাদের সে সামথর্য নেই। চিকিৎসা করতে গিয়ে ঋণের বোঝা মাথায় চেপেছে। তাই দেশবাসীর কাছে ছেলের জন্য সাহায্য আবেদন জানান তিনি।
পৌরসভার ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মহিলা কাউন্সিলর মুর্শিদা বেগম বলেন,নজরুল সাহেবের ছেলেটি খুব ভালো ও ভদ্র ছেলে। তিনি নিয়মিত খোঁজ খবর রাখেন তাদের। তার বাবার যা ছিল সবই শেষ হয়ে গেছে ছেলের চিকিৎসার জন্য।তিনি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে যতটুকু পেরেছেন করেছেন। দেশবাসীর কাছে তিনি অনুরোধ জানাচ্ছেন সবাই নাইমুলের পাশে এসে দাঁড়াতে।সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে।
সময় এসেছে আমাদের সবার একটুখানি মানবিক হওয়ার। হয়তো আপনার ছোট্ট সহযোগিতাই ফিরিয়ে দিতে পারে এক তরুণের বেঁচে থাকার আলো, এক মায়ের মুখের হাসি, এক বাবার নিঘুর্ম রাতের শান্তি।
সহায়তার জন্য নাইমুল ইসলাম নাইম এর যোগাযোগ ও বিকাশ নম্বর: ০১৭৩৬-৪৯৭৬৬৪

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আনছারুজ্জামান (রেজুয়ান ইসলাম).এম এ,মোবাইল নং- 01717934449 অথবা 01711420076,সহ-সম্পাদক:   ইয়ামিন হাসান-01710524903,বার্তা সম্পাদক: ফারুক হোসেন,সহ-বার্তা সম্পাদক: জাফর ইকবাল রানা।

টি.এল নম্বর: 00078/2026

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃফলিয়া দিগর (বটতলা) বাজার,কামালের পাড়া,সাঘাটা,গাইবান্ধা।

প্রিন্ট করুন