
পাইকগাছা প্রতিনিধিঃ–
সরকার পতনের পরও থামেনি খুলনা পাইকগাছার নোয়াকাটি গ্রামের মৃত সৈয়েদ মল্লিক এর ছেলে
শহিদ মল্লিক এর মাদকের রমরমা ব্যবসা।
জানা যায়, খুলনা পাইকগাছা সীমান্তে কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী নোয়াকাঠি গ্রামে গড়ে উঠেছে মাদকের আখড়া। সাতক্ষীরার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে উপজেলার পাটকেলঘাটা হয়ে সরাসরি চলে আসে নোয়াকাটি। এ ছাড়াও পাইকগাছার কফিলমুনি বাজারে রয়েছে শহিদ মল্লিকের মাদক সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি।
সেখানে থেকেও নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য আনা হয় এই আখড়ায়। এখান থেকে ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক, নারী ও শিশুদের মাধ্যমে , পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি, শ্রীরামপুর, নোয়াকাঠি, মাহম্নুদকাঠি, সোনাতনকাটি, কাজীমূছা,রহিমপুর, হরিদাশকাঠি, মালতসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে এই মাদক সম্রাট শহিদ মল্লিক।
এলাকার একাধিক ব্যক্তি নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন- শহিদ মল্লিক ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করে নোয়াকাঠি কপোতাক্ষ নদের ধারে বাবলা বাগান ও বিভিন্ন ব্যক্তির বাড়িতে সংরক্ষণ করে। পরে সুযোগ বুঝে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলচালক, নারীদের মাধ্যমে কপিলমুনি-কানাইদিয়া খেয়া ও কপিলমুনি ব্রিজের মাথার খেয়া দিয়ে পার হয়ে পাইকগাছা ও উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলে যায়। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাদক পাচার হয় এই দুই খেয়াঘাট এলাকা ঘিরে।
তারা আরও বলেন, বিগত সরকারের আমলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতার ছত্রছায়ায় এই মাদক সাম্রাজ্য চালাতো শহিদ মল্লিক। রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হলেও তাদের মাদকের ব্যবসার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
তারা আরও বলেন, সন্ধ্যার পর কপিলমুনি খেয়াঘাট থেকে রথখোলা বাজার পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকার মাদকের গন্ধে রাস্তায় চলাফেরা করা যায় না। কপিলমুনি খেয়াঘাটের পাশে বাবলা বন, বলাইর মোড়সহ রথখোলা বাজারের আশপাশ এলাকায় নিয়মিত বসে মাদকের আসর। মাদক সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার যুব সমাজ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। লেখাপড়া খেলাধুলা ছেড়ে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে তারা। সরকার পরিবর্তনের পরে স্থানীয় দুই একজন এলাকা ছাড়লেও শহিদ মল্লিক বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে তার ভয়াবহ মাদকের ব্যবসা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মোটরসাইকেলচালক বলেন, সারাদিন মোটরসাইকেল ভাড়া চালিয়ে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকার বেশি আয় করা যায় না। অথচ কিছু কিছু মোটর সাইকেলচালক সারাদিন গাড়ি না চালিয়ে সন্ধ্যায় বড় বড় ভেটকি মাছসহ হাজার হাজার টাকার বাজার করে বাড়ি যায়। এই টাকার উৎস কী আমার জানা নেই। আমরা গরীব মানুষ। সত্য কথা বললে আমাদের গাড়িতে ইয়াবা রেখে ধরিয়ে দিতে পারে, সে ভয়ে কেউ কিছুই বলি না।
এদিকে ১নং হরীঢালী ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য আজিজুল খাঁন বলেন, শহিদ মল্লিক দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতার ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসা করে আসছে। গত ১২ই জানুয়ারীর এক মাদকসহ গ্রেফতার হলে ও পরবর্তীতে জামিন নিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আবারও মাদক ব্যবসা শুরু করে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সব বাহিনীর সহযোগীতা কামনা করছি।
এদিকে মাদক ব্যবসায় অভিযুক্ত শহিদ মল্লিক এর বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার ব্যবহৃত দুটি নাম্বারে কল দিলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে যদি এমন হয় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।