
মোঃ মিনারুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি: বগুড়ায় ভক্তদের চোখের জলে দেবী দুর্গার বিদায়ে বিষাদ, সিঁদুর খেলার আনন্দ ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। সকালে বিহিত পূজা, পুস্পাঞ্জলি ও শান্তির জল ছিটানোর পর দেবী দুর্গাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয়। পাঁচ দিনব্যাপি এই উৎসবের জন্য ভক্তদের আবার অপেক্ষা করতে হবে এক বছর। প্রতি বছরের মত উৎসব উপলক্ষ্যে বগুড়ার সবগুলো পূজামণ্ডপ ভাসছিল আনন্দ ও আলোর বন্যায়। গত চার দিন আনন্দ উল্লাসের পর বিজয়া দশমীতে দেবীর বিদায়ের করুন সুর বেজে উঠে ভক্তদের মাঝে। দেবী দুর্গাকে বিদায় জানালেও ভক্তদের অন্তরে আগামী বছরে তার পুনরাগমনের প্রত্যাশায় আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুরের পর থেকে করতোয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে একের পর এক শহরের ও শহরের আশেপাশের বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে ঘাটগুলোতে প্রতিমা নিয়ে আসেন ভক্তরা। শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। চলে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত। এবছর মহালয়ার মধ্য দিয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছিল। ওইদিন থেকেই দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়। এরপর গত রোববার ষষ্ঠী থেকে পাঁচ দিনের যে দুর্গোৎসব শুরু হয়েছিল, আজ বৃহস্পতিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো এ আয়োজন। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমীতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে শেষবারের মত দেবীর আশির্বাদ কামনায় মন্দিরে মন্দিরে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের ভক্ত নিবিষ্ট মনে প্রার্থনা করেন। প্রতিটি মণ্ডপে পুষ্পাঞ্জলি দেয়া হয়। দেবীর বিদায় বেলায় চলেছে ঢাক আর শঙ্খধ্বনি, টানা মন্ত্রপাঠ, উলুধ্বনি, অঞ্জলি। সকালে দশমী পূজা আরম্ভ হয়। করা হয় পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন। শাস্ত্রমতে এদিন দেবী দুর্গা মর্ত ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে ফিরে যান তার সন্তানদের সাথে নিয়ে। এই পাঁচ দিন উৎসবকে ঘিরে বাঁধভাঙ্গা আনন্দে মেতে উঠেছিল ভক্তরা। প্রতিবছরের মত এবারও বিসর্জনের আগে সকাল ১১টার দিকে মণ্ডপে মণ্ডপে অুনষ্ঠিত হয় সিঁদুর খেলা, আনন্দ উল্লাস আর নাচগান। হিন্দু সধবা নারীরা দেবী প্রতিমায় সিঁদুর পরিয়ে নিজেরা একে অন্যকে মঙ্গল কামনায় সিঁদুর পরান।