গাইবান্ধার সাঘাটায় পরকীয়ার অভিযোগ তুলে এক নারীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের চিথুলিয়া গ্রামের শ্রী নিশি চন্দ্র দাসের স্ত্রী শ্রীমতি শান্তনা রানী দাস (২৫) সাংবাদিকদের এসব জানায়। এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, জহুরুল ইসলাম নামের এক বিকাশ, ফ্লেক্সি ব্যবসায়ীর সাথে গোপন সম্পর্ক থাকার অভিযোগে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি পূর্ব শত্রুতার জেরে তাদেরকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করে।
সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দিবাগত রাতে শান্তনা রানী দাসের বাড়িতে পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগে জহুরুল ইসলামকে আটক করে স্থানীয় ক’জন ব্যক্তি। তারা হলেন আব্দুল মালেক, আজাদ মিয়া, বুলেট, পলাশ ফকির। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নারীর দাবি, অভিযুক্তরা জোর করে জহুরুলকে শ্রীমতি শান্তনা রানী দাসের বাড়িতে নিয়ে যায় এবং পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগ তুলে বিকাশ ব্যবসায়ী জহুরুলের থেকে ১ লক্ষ টাকা আদায় করে।
তবে এ বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহে গেলে স্থানীয়দের সাথে কথা বললে জানা যায়, শান্তনা রানী দীর্ঘদিন থেকে পারিবারিক অর্থ আদান প্রদান করে বিকাশ ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামের দোকানে। এতে অভিযোগ করা হিন্দু নারীর সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে মুসলিম যুবক জহুরুলের। তারা বলেন, জহুরুল মাঝে মাঝেই রাতের বেলা শান্তনা রানী দাসের বাড়িতে আসে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারীর দাবি, তার স্বামী অঞ্চলের বাহিরে থাকলে তিনি টাকা পাঠায় জহুরুলের কাছে তখন অনেক সময় রাত হওয়ায় সে আমাদের বাড়ি এসে টাকা দিয়ে যায়। এর বাহিরে আমার তার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। একই বিষয় জানায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী শ্রী নিশি চন্দ্র দাসও।
এ বিষয়ে জহুরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ওই নারীর সাথে আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই। ব্যবসায়িক কারনে তার সাথে আমার সম্পর্ক। ঘটনার দিন আমি টেটা দিয়ে মাছ ধরতে গিয়েছিলাম চিথুলিয়ায়। স্থানীয় কিছু যুবক আমাকে জোর করে আটকে শান্তনা রানীর বাড়িতে নিয়ে যায় এবং শ্লীলতাহানি ও হুমকি ধামকি দিয়ে আমার থেকে ১ লাখ টাকা আদায় করে। কিন্তু আমি এরকম কোনো অশ্লীল কাজ করি নি। আমি এ বিষয়ে একটি সাঘাটা থানায় ও গাইবান্ধাএ সেনা ক্যাম্প বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।
অপরদিকে, অভিযোগে নাম থাকা ব্যক্তিদের মাঝে পলাশ ফকিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ হলে এ প্রতিবেদককে বলেন, অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ায় আমরা এলাকাবাসী তাদের আটক করেছিলাম। এখন আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা কোনো টাকা পয়সা নেই নি তাদের থেকে বরং তারাই আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করে চাঁদা দাবি করেছে। তিনি আরও বলেন, আমরাও থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
সাঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাদশা আলম জানান, বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকার হাঁটে বাজারে আলোচনা সমালোচনার জন্ম হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক।