সরকার ঘোষিত ন্যায্য মূল্যে খোলা বাজারে ডিমের ট্রাকসেল কার্যক্রম উদ্বোধন ।আজ ১৫ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ দুপুর ১২.৩০ মিনিটে টিসিবি ভবন চত্বরে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় ও বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন(বিপিএ) এর সহযোগিতায় সরকার ঘোষিত ন্যায্য মূল্যে (প্রতিটি ডিম ১২ টাকা মূল্যে) খোলা বাজারে ডিমের ট্রাকসেল কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।বর্ণিত উদ্বোধন কার্যক্রমে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর চেয়ারম্যান *ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আরিফুল হাসান, পি.এস.সি. এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক জনাব ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেনসহ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন(বিপিএ)-এর সভাপতি জনাব সুমন হাওলাদার এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। উদ্বোধনকালে মহাপরিচালক বর্ণিত ট্রাকসেল কার্যক্রমের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ডিমের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে অধিদপ্তর কর্তৃক অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট অংশীজনের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভা করা হয়। অতঃপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ সরকার কর্তৃক প্রতিটি ডিমের মূল্য ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। ডিমের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত এ মূল্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অধিদপ্তর কর্তৃক ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অধিদপ্তরের অভিযানের প্রেক্ষিতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রয় হলেও গত ৮-১০ দিন ধরে ডিমের মূল্য পুনরায় বৃদ্ধি পায়। এমন পরিস্থিতিতে গত ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন(বিপিএ)-এর পক্ষ থেকে সরকার ঘোষিত ন্যায্য মূল্যে (প্রতিটি ডিম ১২ টাকা মূল্যে) খোলা বাজারে ডিমের ট্রাকসেল কার্যক্রম পরিচালনা করার প্রস্তাব দেন এবং এক্ষেত্রে অধিদপ্তরের সহযোগিতা চান। এ প্রেক্ষিতে আজ সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রয় (ট্রাকসেল) কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। তিনি বলেন, বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে ভোক্তাদের সুবিধার কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন(বিপিএ)-এর এরকম মানবতামূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমি আশা করবো ডিম উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে আরও যে বড় কোম্পানিগুলো আছে তারাও যেন এ কার্যক্রম চালু করে। তিনি আরও বলেন, এখানে ট্রাকসেলের মাধ্যমে সরকার ঘোষিত ন্যায্য মূল্যে ডিম বিক্রি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ এবং যারাই এখান থেকে কিনবে তারা কিছুটা স্বস্তি পাবে। এ সময় তিনি আজকের মত অন্যান্য সময় যখন নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়, তখন এসব বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের পাশে এসে দাঁড়াবে সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জনগণ বাঁচলে, তারাও (শিল্প প্রতিষ্ঠান) বাঁচবে। অর্থাৎ, জনগণের কষ্টের সময় তারা যদি এসব কার্যক্রমগুলো চালায়, তাহলে জনগণ কিছুটা হলেও স্বস্তির জায়গা পাবে। এছাড়াও তিনি এরূপ ট্রাকসেলের মাধ্যমে সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা দরে আলু বিক্রয় করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানান। তিনি জানান দেশে ১৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং এর চালান খুব শীঘ্রই দেশে আসবে। আমদানিকৃত ডিমের চালান দেশে আসলে ও এরূপ সহযোগিতা কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে, আশা করা যায় ডিমের সরবরাহ স্বাভাবিক ও সরকার নির্ধারিত মূল্য বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আরিফুল হাসান, পি.এস.সি. এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, প্রান্তিক খামারীগণ দূরদূরান্ত থেকে ডিম এনে ঢাকায় ১২ টাকা দরে বিক্রয় করার মাধ্যমে অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। তিনি এই কার্যক্রমের সফলতা কামনা করেন। বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশন(বিপিএ)-এর সভাপতি জনাব সুমন হাওলাদার বলেন, ভোক্তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই তাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি জানান, এর মাধ্যমে খামারীগণ ডিমের ন্যায্য মূল্য পাবে এবং ভোক্তাগণ ন্যায্য মূল্যে ডিম পাবে। তিনি বলেন, উদ্যোক্তা খামারীদের মাধ্যমে শীঘ্রই ঢাকা মহানগরের ১৫-২০ টা পয়েন্টে পিকআপ ভ্যানে করে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রয় করা হবে। এক্ষেত্রে তিনি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে একই দরে ডিম বিক্রয় করার জন্য সরকারি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। মহাপরিচালক পরিশেষে বাংলাদেশে বড় কোম্পানিগুলোর এই ধরণের উদ্যোগের ফলে সরবরাহব্যবস্থায় একটা ইতিবাচক ধারা তৈরি হবে এবং এতে করে বাজার স্থিতিশীল থাকবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।