প্রিন্ট এর তারিখঃ মঙ্গলবার ৮ই জুলাই, ২০২৫ ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ ১২ই মহর্‌রম, ১৪৪৭

শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার

শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার! । বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় পৌর সভার ৬ নং ওয়ার্ডে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণকাজে ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের পাথর, বালি ও রড। এছাড়াও পাথর ও বালির মিশ্রণেও রয়েছে অনিয়ম। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় করছেন ঠিকাদার। জানা যায়, সারাদেশের ন্যায় স্থানীয় যুবসমাজকে খেলামুখি করতে ও জনগণের দাবির মুখে সরকার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ প্রকল্পের (২য় পর্যায়) আওতায় মোট ৫ কোটি ৩৪ লাখ ৮ হাজার ২৬ টাকা ব্যয়ে এ নির্মাণকাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস এস এসটি অ্যান্ড এস এস কনস্ট্রাকশন। যাহা বাস্তবায়নে রয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। আর এর স্থানীয়ভাবে দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। কাজ শুরুর প্রথম থেকেই নিম্নমানের রড পাথর ও বালি ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ দিয়ে আসলেও নীরব ভূমিকায় রয়েছেন তারা। নির্মাণাধীন শেখ রাসেল স্টুডিয়ামের দ্বিতীয় তলায় সাধারণ ও ভিআইপি গ্যালারি ও যে সিঁড়ি বালু সিমেন্ট পাথরের যে ঢালাই দেয়া হয়েছে অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে। এবং ঢালাই কাজে সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়ায় এখন হাত দিয়ে ধরলেই ঝর ঝর করে খসে পড়ে। অপর একটি গ্যালারি নির্মাণ কাজের ঢালাই চলাকালে দেখা যায় মাঠের মধ্যে ফেলে রাখা পুরাতন রড দিয়েই সেখানে ঢালাই দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও স্টুডিয়ামের মূল ভবনের পিলার গুলোতে বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। গ্যালারির পলেস্তারার কাজ চলছে সেখানেও দেখা গেছে ব্যাপক অনিয়। নিম্নমানের বালু না চেলেই পলেস্তারার কাজের জন্য দ্বিতীয় তলায় উত্তোলন করছে শ্রমিকরা। গ্যালারিতে রড সিমেন্টের ঢালাই দেয়ার সময় ব্যবহার করা প্লাস্টিকের চট ও পলিথিন ঠিকমতো পরিষ্কার না করে পলেস্তারা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করছে শ্রমিকরা। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে স্টুডিয়াম নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার জামিল তড়িঘরি করে ছুটে এসে বলেন কাজ কিভাবে করব সেটা তো আমরাই ভালো জানি। সাংবাদিকদের থেকে আমাদের কাজ শেখার দরকার নাই। তার কাছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের ফোন নাম্বার চাইলে তিনি ফোন নম্বর দেননি। তার ফোন থেকে কল করে সাংবাদিকদের সাথে তিনি কথা বলিয়ে দেয় প্রজেক্ট ডাইরেক্টর আহসান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। আহসান নামের ঐ ব্যক্তি তখন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, কোন অনিয়ম হলে কাজ বন্ধ রাখা হবে। এবং তিনি তখন সাংবাদিকদের তার ফোন নাম্বার দিয়ে বলেন, সাংবাদিক ভাইরা কাজে কোন অসঙ্গতি হলে সরাসরি আমাকে জানাবেন। তার কাছে একাধিকবার অভিযোগ দিলেও এখনো নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ কাজ চলছে। সরজমিন আরো দেখা যায়, ঢালাই কাজের জন্য যে সমস্ত কালো পাথর স্তূপ রাখা হয়েছে, তা ব্যবহারে অযোগ্য। ২.৫ এফএম বালি ব্যবহার করার নির্দেশনা থাকলেও লোকাল বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার সেটাও করা হচ্ছে না সঠিক পরিমাপে। স্থানীয় লোকজন একাধিকবার অভিযোগ করলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোনো কর্ণপাত করছে না। লোকাল বালির সঙ্গে সিমেন্ট ও পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া রডের ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের। এর পরিমাপও সঠিক নয়। বালি ওয়াশ করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। ব্যবহৃত হচ্ছে ধুলা ময়লা মিশ্রিত বালি। স্থানীয় জসিম হাওলাদার জানান, কাজ শুরুর প্রথম থেকে যে রড, বালি ও পাথর আনা হয়েছিল, তাও ছিলো অত্যন্ত নিম্নমানের। এলাকাবাসি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সজল চন্দ্র শীলের কাছে একাধিকবার অভিযোগ দিলেও তিনি বলেন, স্টেডিয়াম নির্মাণে কোনো দুর্নীতি সহ্য করা হবে না। সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করলে তা বন্ধ করে দেয়া হবে। তার এই কথা শুধু কথাই রয়ে যায়। তার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সম্পাদকঃ মোঃ আনছারুজ্জামান (রেজুয়ান ইসলাম) এম.এ (01711420076 অথবা 01717-934449),প্রকাশক: মো: রাজিবুল করিম রোমিও,বার্তা সম্পাদক: মো: ফারুক হোসাইন,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ফলিয়া দিগর (বটতলা) বাজার,কামালেরপাড়া,সাঘাটা,গাইবান্ধা।      

প্রিন্ট করুন