সুলতান কবির : মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় জুলাই শহীদ দিবস-২০২৫ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার (১৬ জুলাই ২০২৫) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক ভবনের সেমিনার হলে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, “জুলাই আন্দোলনের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে। ২০২৫ সালের গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। তরুণদের আত্মত্যাগ জাতীয় বিবেককে নাড়া দেয় এবং আমাদের দায়িত্বশীলতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে হতে হবে মুক্ত চিন্তা ও মানবিক মূল্যবোধ চর্চার জায়গা।” সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। তিনি বলেন, “শিক্ষাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক মিছিলে নিয়ে যাওয়া হতো, গেস্টরুমে সারারাত দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। আজও দেশে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগের অভাব রয়েছে। যোগ্যতা নয়, পছন্দের ভিত্তিতে নিয়োগ হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যদি স্বপ্নবাজ ও আদর্শবান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, তবেই জুলাই আন্দোলনের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়ন সম্ভব।” বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শহীদ মারুফের মা মোর্শেদা বেগম। তিনি বলেন, “আমার সন্তান যে উদ্দেশ্যে প্রাণ দিয়েছে, সেই উদ্দেশ্য যেন বাস্তবায়ন হয় — এটাই আমার দাবি।” আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণ উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব অধ্যাপক ড. দেলোয়ার জাহান মলয়। সভাপতিত্ব করেন শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক এবং উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোঃ ফজলুল করিম। এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ মতিউর রহমান, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. মহিউদ্দিন, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ ইমাম হোসেন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া এবং আহত শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মনিরুল ইসলাম ও আশরাফুল আলম হৃদয়। আলোচনা শেষে শহীদ মারুফের মায়ের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। আলোচনায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।