কে.এম. হাছান
চাঁপুরের ফরিদগঞ্জে হাই ভোল্টেজ জেনেটারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আব্দুল মান্নান (৪৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। পরিত্যক্ত একটি ডোবা জমি থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌরসভার সাফুয়া এলাকার ডাকাতিয়া নদীর পাড়ের ডোবা জমি থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃত আব্দুল মান্নান সাফুয়া পণ্ডিত বাড়ির বাসিন্দা। তিনি ওই বাড়ির মৃত রুহুল আমিনের ছেলে। পেশায় কৃষক মান্নান ছিলেন এক ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে আব্দুল মান্নান ধানের বীজ বপনের জন্য বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে আর তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। দিনভর খোঁজাখুঁজির পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁর ছেলে রমজান ও ভাই আব্দুল হান্নান প্রতিবেশী বিল্লাল গাজীকে সঙ্গে নিয়ে নদীর পাড়ে গিয়ে পাশের একটি ডোবা জমিতে চিত হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ্ আলম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেন। এ ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ফরিদগঞ্জ-হাজীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকুর চাকমা।
স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর খলিলুর রহমান বলেন, সকালবেলা মান্নান ধানের জমি পরিষ্কার করতে গিয়েছিলেন। সেখানে জেনেটারের হাই ভোল্টেজ লাইনের লিংকেজ তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। কারও সঙ্গে তাঁর কোনো বিরোধ ছিল না। হত্যা বলেও মনে হচ্ছে না।
সাবেক কাউন্সিলর জাকির হোসেন গাজী বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি মসজিদের জেনারেটরের তার পড়ে আছে। ধারণা করছি, সেই তারে শর্টসার্কিট হয়েই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মান্নান মারা গেছেন।
নিহতের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের অভিযোগ, মসজিদের জেনারেটরের বিদ্যুতের তার নিয়মবহির্ভূতভাবে কলা গাছের সঙ্গে পেঁচিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় সংযোগ দেওয়া হয়েছিল।
তারা বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। মরদেহ উদ্ধারের পর কেউ দ্রুত সেই বিদ্যুতের তার কেটে ফেলেছেন বলেও অভিযোগ ওঠেছে।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ্ আলম বলেন, মঙ্গলবার রাত প্রায় ১০ টার সময় স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তার দুই হাত ও বুকে বিদ্যুতায়িতের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়েই মারা গেছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে যানা যাবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।