
মো:মিজানুর রহমান,স্টাফ রিপোর্টার : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাংলাদেশের প্রান্তিক পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১ জুলাই মঙ্গলবার সমাজসেবা কার্যালয় মির্জাপুর টাঙ্গাইল কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি সকাল ১০টায় মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আরিফুল ইসলাম,মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জেলা সমাজসেবা অফিসার টাঙ্গাইল , উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোবারক হোসেন, মির্জাপুর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সহ অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা বৃন্দ,শিক্ষক বৃন্দ, ব্যাংকার, ছাত্র-ছাত্রী ও সাংবাদিকবৃন্দ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রান্তিক পেশাজীবী জনগোষ্ঠী যেমন কামার, কুমার, নাপিত, বাঁশ-বেত পণ্য প্রস্তুতকারী,কাসা-পিতল পণ্য প্রস্তুতকারী, জুতা মেরামত ও প্রস্তুতকারীদের প্রান্তিক পর্যায় থেকে তুলে এনে কিভাবে মূল ধারায় সংযুক্ত করা যায় সে বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। এই জনগুষ্ঠী বাংলাদেশের আদি ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে গিয়ে এখন ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত। চরম কষ্টে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে এরা এখন নিজেদেরকে সমাজে মূল্যহীন ভাবে। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া নিজেদের এই ব্যবসাকে পারিপার্শ্বিক কারণে তারা যেমন ধরে রাখতে পারছে না তেমনি আবার জীবিকার তাগিদে ছেড়েও দিতে পারছে না। তারা যে অন্য কোন কাজ শিখেনি, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও স্ব স্ব পরিবারে কাছ থেকে তারা কেবল এই কাজটিই সুনিপূন ভাবে শিখেছে। নানা প্রতিকূলতায় এই শিল্প গুলো আজ ধ্বংসের সম্মুখীন, হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের সেই পুরনো ঐতিহ্য। অথচ অতীতে এই শিল্প গুলোর কতোই না কদর ছিল। কিন্তু তারা যে আজ আর একা নয়, তাদের পাশে রয়েছে সমাজসেবা কার্যালয়। এই মেসেজটুকুই তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে টাঙ্গাইল জেলার যে ছয়টি উপজেলায় সমাজসেবা কার্যালয় হতে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে মির্জাপুর উপজেলা তার মধ্যে একটি। এই অবহেলিত পেশাজীবি জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। যার মধ্যে রয়েছে ; ১.তাদেরকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মধ্যে নিয়ে আসা। ২.একটা নির্দিষ্ট অংকের আর্থিক সহায়তা প্রদান। ৩.তাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো সহজ বিপণন এর ব্যবস্থা করণ। ৪.সার্বিক মনিটরিং এর ব্যবস্থা করণ। ৫.জনসচেতনতা বৃদ্ধিকরণ অনুষ্ঠানটিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ বি এম আরিফুল ইসলাম মির্জাপুর উপজেলার প্রান্তিক পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে তাদের পাশে থাকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এ বিষয়ে দ্রুত কাজ করার লক্ষ্যে সমাজ সেবা কর্মকর্তাকে তিনি একটি দিকনির্দেশনাও প্রদান করেন।