প্রিন্ট এর তারিখঃ মঙ্গলবার ৮ই জুলাই, ২০২৫ ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ ১২ই মহর্‌রম, ১৪৪৭

বগুড়া চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া মতিউর রহমানের ভিডিও ভাইরাল অতঃপর মামলা

উজ্জ্বল কুমার সরকার , নওগাঁ প্রতিনিধিঃ বগুড়ায় চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া মতিউর রহমান (৪০) এখন নওগাঁর বাড়িতে তীব্র ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে পিঠ ও পায়ে জখম রয়েছে। এদিকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সান্তাহার রেলওয়ে থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ছয় থেকে সাতজনকে আসামি করে মামলাটি করেন। মতিউর নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একসময় অটোরিকশার চালক থাকলেও দুই বছর ধরে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করছেন। বিদেশে পাঠানো এক যুবকের কাগজপত্র নিয়ে ঝামেলার জেরে গত রোববার দুপুরে তাঁকে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নশরৎপুর রেলস্টেশনে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও ওই দিন বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে স্থানীয় লোকজন ধারণা করেন, তিনি মোবাইল চোর বা ছিনতাইকারী। সেই ধারণা থেকে ট্রেন থেকে পড়ার পর তাঁকে উল্টো গণপিটুনি দেওয়া হয়। আহত মতিউর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে গতকাল সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। আজ মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি বারান্দায় বসে তীব্র ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। আত্মীয়স্বজন এসে তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। মতিউরের ছেলে আহসান হাবিব জানান, গতকাল রাতে তাঁর বাবার জ্বর এসেছিল। পুরো শরীর ব্যথায় জর্জরিত। চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসা আর পরীক্ষা করানোর জন্য তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। মতিউরের পরিবারের দাবি, সৌদি আরবে পাঠানো এক যুবকের কাগজপত্র পেতে দেরি হওয়ায় ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়। সেই যুবকের ভাই রাকিব ও শ্যালকেরা ট্রেনে তাঁকে একা পেয়ে ‘চোর’ অপবাদ দিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তাঁর কাছে থাকা ৫০ হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেন। ট্রেন থেকে ঝুলে থাকা অবস্থায় স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়েন মতিউর। এরপর স্থানীয় লোকজনের ভুল ধারণায় তিনি গণপিটুনির শিকার হন। পরে স্বজনেরা ছুটে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মতিউর বলেন, ‘ট্রেনে বগুড়া থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ ৫-৭ জন এসে আমার ওপর চাকু ধরে বলে, আমি নাকি তাদের কাছ থেকে মোবাইল চুরি করেছি। এরপর বুকে, মাথায় এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। একজন চাকু মারতে চাইলে আরেকজন বলে, চাকু মারলে ফেঁসে যাব, একে ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিই, তাহলে মনে হবে ট্রেনে কাটা পড়ে গেছে।’ মতিউর আরও বলেন, ‘তারা আমাকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। একজন আমার হাত ধরে রাখে। আমি আলতাফ নগর স্টেশন থেকে নশরৎপুর পর্যন্ত ট্রেনের সঙ্গে ঝুলে থাকি। নশরৎপুর স্টেশনে পৌঁছালে ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে যাই। আল্লাহর রহমতে কোনোভাবে বেঁচে যাই। ওদের একজনকে চিনতে পেরেছি, ওর নাম সুমন। সে আদমদীঘির দহরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে আর বিদেশে পাঠানো যুবক সজীবের শ্যালক। পরে খবর পেয়ে আমার ছেলে আর স্ত্রী এসে আমাকে উদ্ধার করে। আমাকে আদমদীঘি হাসপাতালে নেয়। হাসপাতাল থেকে গতকাল বাড়ি ফিরেছি।

সম্পাদকঃ মোঃ আনছারুজ্জামান (রেজুয়ান ইসলাম) এম.এ (01711420076 অথবা 01717-934449),প্রকাশক: মো: রাজিবুল করিম রোমিও,বার্তা সম্পাদক: মো: ফারুক হোসাইন,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ফলিয়া দিগর (বটতলা) বাজার,কামালেরপাড়া,সাঘাটা,গাইবান্ধা।      

প্রিন্ট করুন