
গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জামায়াত অফিস ভাঙচুর ও লুটপাটসহ গোবিন্দগঞ্জের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদসহ আওয়ামী লীগের ২২১ নেতাকর্মীর নামে থানায় মামলা করা হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বুলবুল ইসলাম জানান, ‘মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর আগে গত (১৯ এপ্রিল) উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের বেড়া মালঞ্চা গ্রামের ছলিম উদ্দিনের ছেলে জামায়াত নেতা আজাদুল ইসলাম এ মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন গোবিন্দগঞ্জের সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল ও আব্দুল লতিফ প্রধান, শীর্ষ সন্ত্রাসী সাবেক পৌর মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস আলী বাদু, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আ র ম শরিফুল ইসলাম জর্জ, আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান, খ ম সাজু, মাসুদ আলম মণ্ডল, তৌকির হাসান রচি ও আতিকুর রহমান আতিক, সাবেক পৌর কাউন্সিলর শাহিন আকন্দ, জয়নাল আবেদীন, মিজানুর রহমান রিপন, মাসুদ রানা বাপ্পি ও মাজেদুল ইসলাম, গাইবান্ধা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আব্দুল হান্নান আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকলীগের উপজেলা সভাপতি মোয়জ্জেম হোসেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যতম দোসর বিভিন্ন মামলার আসামি রায়হান মোস্তফা কামাল সুমন, বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন অপকর্মের হোতা ও একাধিক মামলার আসামি শাহ আলম সাজুসহ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ২২১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। মামলা সূত্রে জানা গেছে, জামায়াত থেকে নির্বাচিত তৎকালীন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নূরুন নবী প্রধান ভাইস চেয়ারম্যানের পদে যোগদান করার উদ্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের দিকে যাচ্ছিলেন। পৌর শহরের বিএম গার্লস হাইস্কুল রাস্তায় পৌঁছালে সাবেক এমপি আবুল কালম আজাদের নেতৃত্বে অন্য আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৫০ থেকে ৬০ জন আওয়ামী সন্ত্রাসী পিস্তল, রিভলভার, হাতবোমা, সাউণ্ড গ্রেনেড, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নূরুন নবী প্রধান ও বাদি আজাদুল ইসলামসহ মিছিলে অংশ নেয়া জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদেরকে হত্যার উদ্দেশে হামলা করে। সেখান থেকে সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থায় জামায়াত অফিসে গিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। তাদের হামলায় মামলার বাদিসহ জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গুলিদ্ধি হয়ে গুরুতর আহত হয়। হামলাকারীরা সেখান থেকে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন আহতদেরকে উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ পলাশবাড়ি, বগুড়া ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মামলার বাদি জামায়াত নেতা আজাদুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর মামলার এজাহারভূক্ত আসামিরা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় ওই সময় অবৈধ ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবে থানায় মামলা নেয়া হয়নি।’ এদিকে মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার পৌর জামায়াত বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল শেষে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুন নবী প্রধান, উপজেলা আমির মাস্টার আবুল হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি মশিউর রহমান, পৌর আমির শহিদুল ইসলাম, সেক্রেটারি হাসান সাঈদ তালুকদার, উপজেলা জামায়াতের যুব বিভাগের নেতা ফারুক, সোহাগ ফুল মিয়া, উপজেলা শিবির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, মামলা নিয়ে একটি কুচক্রিমহল নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে তাদের নানা পদক্ষেপের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, ‘২৪-এর চেতনার সাথে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করে আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে। এ সময় বক্তারা মামলার আসামিদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতারের দাবি জানান।’