প্রিন্ট এর তারিখঃ সোমবার ৭ই জুলাই, ২০২৫ ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ ১১ই মহর্‌রম, ১৪৪৭

এলিনা শাম্মির মনোযোগ এখন চলচ্চিত্রে!

শোবিজ পথ পরিক্রমায় তার শুরুটা ছিল টেলিভিশন অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মাধ্যমে। বাংলাদেশের প্রায় সব টিভি স্টেশনে এক সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় কেটে যেতো তার দিন – রাত। এরপর মডেলিং এবং অভিনেত্রী পরিচয়ের মোড়কে ঢেকে যায় তার উপস্থাপনা স্বত্ত্বা। আর এখন তার সময় কাটে চিত্রনাট্য লিখে, পড়ে আর অভিনয় করে। যার কথা বলা হচ্ছে তিনি সাম্প্রতিক সময়ের ব্যস্ততম অভিনেত্রী এলিনা শাম্মি। একাধারে তিনি উপস্থাপক, মডেল, নাট্যকার এবং অভিনেত্রী। তিনি টেলিভিশন নাটকের বাইরে চুটিয়ে অভিনয় করছেন বড়পর্দায়। একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে চলেছেন। দেশ বিদেশে ছুটে বেড়াচ্ছেন অভিনয়ের টানে। আর এই সুবাদে তার পরিচিতি গড়ে ওঠেছে বর্তমান সময়ের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে।
ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে শাম্মি অভিনীত বারোটি ছবি। মুক্তির অপেক্ষায় এবং নির্মাণাধীন আছে আরও কয়েকটি। এগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’। ঐতিহাসিক এই চলচ্চিত্রে শাম্মিও অভিনয় করছেন একটি ঐতিহাসিক চরিত্রে। তাকে দেখা যাবে খালেদা জিয়ার চরিত্রে। ছবিটি ১৩ অক্টোবর মুক্তি পাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে কাজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে শাম্মি বলেন, বায়োপিকে আমি বেগম জিয়ার চরিত্রে অভিনয় করেছি। দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। শ্যাম বেনেগাল আমার অডিশনে ছিলেন। তিনিই এই চরিত্রের জন্য আমাকে উপযুক্ত মনে করেছেন। কাজের ব্যাপারে তিনি ও তার টিম খুবই প্রফেশনাল। ছবিটির নির্মাণ কাজও ভালো হয়েছে। এমন একটি ঐতিহাসিক ছবির অংশ হতে পেরে গর্ববোধ করছি। ছবিটি নিয়ে আমি রোমাঞ্চিত।
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকের ডামাডোলে শাম্মির ক্যারিয়ারে যুক্ত হয়েছে নতুন পালক। প্রথমবার তিনি অভিনয় করতে যাচ্ছেন প্যান – ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্রে। অনন্য মামুনের পরিচালনায় নির্মিতব্য ছবিটির নাম ‘দরদ’। এই ছবি প্রসঙ্গে শাম্মির ভাষ্য, ২০ অক্টোবর শুটিং শুরু হবে ছবিটির। ভারতের বেনারসে বর্তমানে এই ছবির টিম অবস্থান করছে। তারা শুটিং লোকেশন রেকি করছে। আমরাও শীঘ্রি তাদের সাথে যোগ দেবো। আমি অন্যান্য ছবির মতো এখানেও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছি। আপাতত এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।
শাম্মি জানান, ‘দরদ’ ছবিতে অভিনয় করবেন ঢালিউডের সুপারস্টার শাকিব খান। তার সঙ্গে এর আগে হিমেল আশরাফের বহুল আলোচিত ‘প্রিয়তমা’ ছবিতে অভিনয় করেছেন শাম্মি। সে কথা মনে করিয়ে দিতে স্বল্পভাষী এই অভিনেত্রী বললেন, ‘প্রিয়তমা’ ছবিটি নিয়ে খুবই ভালো সাড়া পেয়েছি। আমার চরিত্রটি নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে দর্শক তাদের ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন। আবারও শাকিব খানের সাথে অভিনয় করতে যাচ্ছি। এই কাজটিও ভালো হবে বলে আমার বিশ্বাস।
এখন পর্যন্ত এলিনা শাম্মি অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলো হচ্ছে শাহ আলম কিরণের ‘একাত্তরের মা জননী’, অরূপ রতন চৌধুরীর ‘স্বর্গ থেকে নরক’, আশরাফ শিশিরের ‘আমরা একটি সিনেমা বানাবো’, অরণ্য পলাশের ‘গন্তব্য’, অনন্য মামুনের ‘কসাই’ ও ‘রেডিও’, ইফতেখার শুভর ‘মুখোশ’, আসিফ আকবরের ‘এমআর নাইন’, মুশফিকুর রহমান গুলজারের ‘দু:সাহসী খোকা’, জুলফিকার জাহেদীর ‘কাগজ’, সাইফ চন্দনের ‘লোকাল’ ও রকিবুল আলম রকিবের ‘ভাইয়ারে’। যার মাঝে ‘এমআর নাইন’ একটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র। এই কথা স্মরণ করে শাম্মি জানান, ‘এমআর নাইন’ আমেরিকা – কানাডায়ও মুক্তি পেয়েছে। এমন একটি ছবিতে কাজ করতে পারা দারুণ একটি ব্যাপার।
টেলিভিশন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা, মডেলিং ও নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রের বিশাল আঙিনায় পা রাখা প্রসঙ্গে শাম্মি বলেন, তখন আমি উপস্থাপনা করি। একদিন এসএটিভি’র একটি অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্র পরিচালক শাহ আলম কিরণের সাক্ষাৎকার নিই। তিনিই আমাকে তার পরিচালিত ‘একাত্তরের মা জননী’ ছবিতে কাস্ট করেন। এভাবেই আমার বিনোদনের বৃহৎ মাধ্যম চলচ্চিত্রে জড়িয়ে যাওয়া।
শাম্মি মুক্তির অপেক্ষায় থাকা চলচ্চিত্রের কথা জানিয়ে বলেন, কয়েকটি ছবি শীঘ্রি মুক্তি পাবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বন্ধন বিশ্বাসের ‘ছায়াবৃক্ষ’, তানভির হাসানের ‘মধ্যবিত্ত’, সাইফ চন্দনের ‘কয়লা’ ও অপূর্ব রানার ‘জলরঙ’। এছাড়া মাসুদ পথিকের ‘বক’ ছবিতেও কাজও শেষ করেছি। ‘কয়লা’র শুটিং এখনও বাকি আছে।
চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ওয়েব প্ল্যাটফর্মেও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলছেন শাম্মি। রায়হান রাফি পরিচালিত ‘জানোয়ার’ তাকে এই মাধ্যমে আলোচনায় নিয়ে আসে। তিনি বলেন, ‘জানোয়ার’ আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম কাজ। যার জন্য এখনও দর্শকের সাধুবাদ পাচ্ছি। এরপর ইফফাত জাহান মম’র ‘মুনতাসির’ এ কাজ করেছি। এই কাজটিও আমার ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য কাজ।
উপস্থাপক থেকে পুরোদস্তুর অভিনেত্রী বনে যাওয়া শাম্মি ক্যারিয়ার নিয়ে কী ভাবছেন জানতে চাইলে তার ঝটপট উত্তর – এখন চলচ্চিত্রেই বেশি কাজ করা হচ্ছে। আমার সৌভাগ্য ছবিগুলোর একেকটি চরিত্র অন্যটির চেয়ে আলাদা। তাই বৈচিত্র্যময় কাজই করা হচ্ছে বেশি। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ওটিটিতেও মনোযোগ থাকছে। আপাতত এই দুটো মাধ্যমে অভিনয় নিয়েই আমার যতো ভাবনা।

সম্পাদকঃ মোঃ আনছারুজ্জামান (রেজুয়ান ইসলাম) এম.এ (01711420076 অথবা 01717-934449),প্রকাশক: মো: রাজিবুল করিম রোমিও,বার্তা সম্পাদক: মো: ফারুক হোসাইন,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ফলিয়া দিগর (বটতলা) বাজার,কামালেরপাড়া,সাঘাটা,গাইবান্ধা।      

প্রিন্ট করুন