মোঃ উজ্জল সরকার , গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় শ্রীধাম বর্মন (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এরই প্রতিবাদে আন্দোলনে ফুসে উঠেছে স্বজন ও এলাকাবাসী। রোববার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার বোনারপাড়ায় একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে গিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা শ্রীধাম বর্মণ হত্যাকারীদের বিচার দাবী জানিয়ে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসাহাক আলী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বোনারপাড়া ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক রাজীব রায়, নিহত শ্রীধাম বর্মণের বড় ভাই সুবাস চন্দ্র দাস, বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ সাঘাটা উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি প্রদীপ কুমার কর, মাসুদুর রহমান মাসুদ, ভানু চন্দ্র দাস ও রামনাল চন্দ্রসহ অনেকে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি ছাটকালপানি (মাঝিপাড়া) গ্রামের শ্রী মোসারু বর্মনের ছেলে ও বোনারপাড়া মাছ আড়তের মাছ ব্যাবসায়ী শ্রীধাম বর্মণকে মিলন মিয়া, এরশাদ মিয়া, রফিকুল ইসলাম ও আবুল কালাম, লিটন মিয়া কর্তৃক পিটিয়ে হত্যা করেছে। এঘটনার ৭২ ঘন্টা হতে চললেও অপরাধীদের এখনও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। অবিলম্বে অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনলে আগামীকাল ২৮ ও ২৯ অক্টোবর বোনারপাড়ায় অর্ধদিবস হরতাল পালনসহ কঠোর কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে। সাঘাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা বলেন, বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়ে বিরোধের কারণে হত্যার এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার মোশারফ হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য; বোনারপাড়া হাটের সাবেক ইজারাদার মিলন মিয়া ও রফিকুল ইসলাম তেলিয়ান মৌজার ছাটকালপানি মাঝিপাড়ার একটি বিল দখল করে সেখানে মাছ চাষ প্রকল্প পরিচালনা করেন। তারা মাঝিপাড়া মন্দির থেকে বৈদ্যুতিক লাইন নেন। তবে বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া থাকায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরে মন্দির কমিটির উদ্যোগে সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়। সংযোগ পুনঃস্থাপনের পর মিলন মিয়া ও তার সহযোগীরা মন্দিরের বৈদ্যুতিক মিটার থেকে তাদের মাছ চাষ প্রকল্পের জন্য সংযোগ নিতে চাইলে মন্দির কমিটির সদস্য ও মাছ ব্যবসায়ী শ্রীধাম এতে বাধা দেন। এই ঘটনায় বিরোধের একপর্যায়ে গত বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে মিলন মিয়া, এরশাদ মিয়া, রফিকুল ইসলাম ও আবুল কালামসহ ৪-৫ জন মিলে শ্রীধাম বর্মণকে মারধর করেন এবং মাছ বিক্রির ট্রে দিয়ে বুকে আঘাত করেন। শ্রীধামকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।