প্রিন্ট এর তারিখঃ সোমবার ৬ অক্টোবর, ২০২৫ ২১ আশ্বিন, ১৪৩২ ১৩ রবিউস সানি, ১৪৪৭

তদন্ত দাবি সচেতন মহলের। আদিতমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিহাটের আদিতমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত দাবি করেছেন এলাকার সচেতন মহল। এর আগে লালমনিহাট জেলা প্রশাসক বরাবর ওই কলেজের শিক্ষক-কর্মচারি ও ছাত্রদের পক্ষ থেকে সম্মিলিত একটি অভিযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক তা আমলে নিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে স্মারক নং- ০৫.৪৭.৫২০০.০৩১.০১.০৪৫.২৩-২৫৭ তারিখ- ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রি.পত্র মোতাবেক সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেন। ওই অধ্যক্ষ তদন্ত ঠেকাতে মরিয়া হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। অভিযোগ ও সরেজমিনে জানা গেছে, আদিতমারী সরকারি কলেজটি ৮ আগষ্ট ২০১৮ ইং তারিখে সরকারিকরণ করা হয়েছে। সরকারিকরণের পরপরই কলেজটির অধ্যক্ষ কয়েকজন নিকট আত্মীয়সহ তাঁবেদার সুবিধাভোগী কয়েকজন  শিক্ষক-কর্মচারীকে ব্যবহার করে অনেকটা স্বেচ্ছাচারিতার পরিবেশ তৈরি করে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। তিনি ১৯৯১ ইং সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করে পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু, মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে বিধি বহির্ভূতভাবে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অধ্যক্ষ বনে যান। এরপর ১৯৯৯ ইং থেকে ২০০৩ ইং এর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বেশকিছু শিক্ষক-কর্মচারিদের নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু, ওই টাকা কলেজের জমি ক্রয় ও উন্নয়ন বাবদ খরচ করার কথা থাকলেও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ সামছুল ইসলাম সুরুজ আততায়ীর হাতে খুন হওয়ার পর তা ভেস্তে যায়। কপাল খুলে যায় অধ্যক্ষ আজিজার রহমানের। এরপর তিনি ক্রয় করেন তাঁর বাড়ির পাশের মৎস্য প্রকল্পের বিঘার পর বিঘা জমি। লালমনিরহাটের খাতাপাড়ায় গড়ে তোলেন একটি বিশাল বাড়ি।বেসরকারি আমল থেকেই তিনি স্থানীয় রাজনীতিতে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামিলীগের যুগ্ম-সম্পাদক হওয়ায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ এর ছত্রছায়ায় তার পাশাপাশি থেকে কাউকে তোয়াক্কা না করে নিজের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন। ষোলো কলা পূর্ণ করেছেন কলেজ জাতীয়করণের সময়। তিনি পদসৃজনের জন্য শিক্ষকদের জিম্মি করে জনপ্রতি এক লক্ষ থেকে পনের লক্ষ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন। এতে আনুমানিক সাত কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। যারা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন, তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। এমনকি কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আবু আওসাদ মোনতাজিমের নের্তৃত্বে একটি টর্চারসেল গঠন করে তাঁদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি নিজেও রাতের আঁধারে মিটিং এর নাম করে শিক্ষক-কর্মচারীদের ডেকে নিয়ে তাঁর অফিসের গোপন কক্ষে যা টর্চারসেল নামে পরিচিত, সেখানে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক টাকা হাতিয়ে নিতেন, তা দিতে কেউ অস্বীকৃতি জানালে কপালে জুটতো নির্যাতন। এছাড়া ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে অন্যায়ভাবে জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত করা, বেতন কর্তন ও আটকে রাখার মতো জঘন্য কাজে লিপ্ত ছিলেন তিনি। অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। তাঁর একনায়কতন্ত্র ও নির্যাতনে তটস্থ কলেজের দায়িত্বরত অনেক শিক্ষক-কর্মচারী। শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয়েছে শোকজের ওপর শোকজ। তাঁর দুর্নীতির বিরুদ্ধে মুখ বন্ধ রাখতে হুমকি প্রদানের মাধ্যমে একাধিক শিক্ষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক সাদা কাগজ ও স্ট্যাম্পে এমনকি চেকের পাতায় স্বাক্ষর নিয়েছেন তিনি। তদন্ত করলে তা প্রমাণিত হবে বলে অনেকেই দাবি করেছেন।  গত ১৩ আগষ্ট, ২০২৪ ইং বন বিভাগের অনুমতি কিংবা কোনো টেন্ডার ছাড়াই কলেজ মাঠের তিনটি জীবিত মেহগনি গাছ বিক্রি করেছেন। যার মূল্য পঞ্চাশ হাজার টাকা। তারমধ্যে একটি গাছ কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা আটকিয়ে দেয়। এ ছাড়াও কলেজ সরকারিকরণের পর থেকে এ পর্যন্ত মেহগনি সহ বিভিন্ন প্রজাতির অর্ধশতাধিক বড় বড় জীবিত গাছ অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন, যার আনুমানিক মূল্য আশি লক্ষ টাকা। এমনকি রংপুর ধাপস্থ মেডিকেল পূর্বগেট সংলগ্ন অভিজাত এলাকায় যৌথ মালিকানাধীন একটি নয়তলা এবং পাকার মাথা এলাকায় নিজ মালিকাধীন আরেকটি ছয়তলা ভবনের দরজা-জানালা, আসবাবপত্র তৈরির কাজে লাগিয়েছেন তিনি। জমি সহ স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের আনুমানিক মূল্য প্রায় পঞ্চাশ কোটি টাকা। এছাড়া কালীগঞ্জে তাঁর নিজ এলাকার আমিনগঞ্জ হাটে কোটি টাকা ব্যয়ে একটি গোডাউন কাম বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বানিয়েছেন। এছাড়া নামে-বেনামে অনেক জমি ক্রয় করেছেন তিনি। চড়ে বেড়ান বিলাসবহুল হাইব্রিড গাড়িতে।  একাডেমিক ভবনের ২০৫ নম্বর কক্ষকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে খাস কামরা হিসেবে ব্যবহার করছেন। তিনি নিয়মিত কলেজে আসেন না। নির্দিষ্ট সময়ের আগে দর্শন বিভাগের সহকারি অধ্যাপক পদ বানিয়ে নেয়া মোঃ কেরামত আলীকে দিয়ে কলেজ চালান। সপ্তাহে একদিন বা দুদিন আসলেও বিকেলে বা সন্ধ্যায় শুধুমাত্র কলেজের আয়ের টাকা নেয়ার জন্য। অন্যান্য সরকারি কলেজের চেয়ে বেশি করে ভর্তি, ফরমপুরণ, সেশন ফি সহ অন্যান্য ফি অন্যায়ভাবে নেয়া হয়। লাইব্রেরি, সেমিনারের নামে ছাত্রদের কাছে টাকা নিলেও নতুন কোনো বই নেই। রোভার, বিএনসিসি, মসজিদ বাবদ ছাত্রপ্রতি বাড়তি টাকা নিলেও তা তিনি আত্মসাত করেন। শিক্ষাবর্ষ পরিবর্তনকালে একাদশ থেকে দ্বাদশ, অনার্সে বর্ষ পরিবর্তনে প্রতিবারই জোরপূর্বক বিধিবহির্ভূতভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের মোটা অংকের টাকা নিয়ে ভর্তি হতে বাধ্য করা হয়। কারিগরী শিক্ষার ক্ষেত্রে দুর্নীতির চিত্র আরও ভয়াবহ। এ বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষক দীপুরাম বর্মনের সহযোগিতায় অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষ আজিজার রহমান।  কলেজে উন্মুক্ত টিউটোরিয়াল কেন্দ্র থাকায় সার্টিফিকেট কেনাবেচায় জড়িত সংশ্লিষ্ট শিক্ষকগণ। চাকরিতে থাকা অবস্থায় কারও কারও পরীক্ষা প্রক্সি পরীক্ষার্থীর মাধ্যমে নিয়ে জনপ্রতি ৪০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষকচক্রটি। এজন্য

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আনছারুজ্জামান (রেজুয়ান ইসলাম).এম এ,মোবাইল নং- 01717934449 অথবা 01711420076,সহ-সম্পাদক:   ইয়ামিন হাসান-01710524903,বার্তা সম্পাদক: ফারুক হোসেন,সহ-বার্তা সম্পাদক: জাফর ইকবাল রানা।

টি.এল নম্বর: 00078/2026

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃফলিয়া দিগর (বটতলা) বাজার,কামালের পাড়া,সাঘাটা,গাইবান্ধা।

প্রিন্ট করুন