:
ভূরুঙ্গামারীতে বেসরকারি ব্যাংক ‘আজিজ কো অপারেটিভ কর্মাস এ্যান্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লিঃ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা। উক্ত শাখায় জমাকৃত টাকা ফেরৎ পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে গ্রাহকরা।
ভূরুঙ্গামারীতে এ.সি.সি.এফ, ব্যাংক লিঃ এর শাখা উদ্বোধন হয় ২০১৪ সালে। সেই থেকে এই শাখায় ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন জিন্না নামের জনতা ব্যাংকের এক সাবেক কর্মকর্তা। একাধিক গ্রাহক জানান, জিন্না সাহেব যেহেতু এর পূর্বে ভূরুঙ্গামারী শাখার জনতা ব্যাংকে দীর্ঘ দিন কর্মরত ছিলেন তাই আমাদের পূর্ব পরিচিত ম্যানেজার হওয়ায় আমরা সরল বিশ্বাসেই এই ব্যাংকে টাকা জমা রাখতাম। বিশেষ করে অবসর প্রাপ্ত লোকজনই বেশি আগ্রহী ছিলেন এই ব্যাংকে ফিক্সড ডিপোজিট করার ক্ষেত্রে। এই ব্যাংকে দুই ধরনের ফিক্সড ডিপোজিটে সবচেয়ে বেশি আগ্রহী ছিলেন গ্রাহকগণ। একটি মাসিক মুনাফা আর অপরটি এককালীন মুনাফা। বেশি মুনাফা পাওয়ার আশায় গ্রাহকগন বেশি বেশি টাকা জমা রাখতেন এই দুই ধরনের ফিক্সড ডিপোজিটে। পরবর্তীতে টাকা উত্তোলনের জন্য গেলে গ্রাহকগন জানতে পারে, তাদের বেশি মুনাফা তো দুরের কথা তাদের মুলধন ও ফেরৎ দেওয়া হচ্ছে না। এমন কি মুলধন পাওয়ারও কোন সম্ভাবনা নেই। এ ব্যাপারে গ্রাহক জবেদা খাতুন, মাসুদা ডেইজী, এরশাদ আলী, আঃ রশিদ ও আলাল মাস্টার সহ আরো অনেকেই জানায়, টাকা উঠানোর জন্য আমরা দিনের পর দিন ঘুরছি কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। কিভাবে এর প্রতিকার পাবো তাও বুঝে উঠতে পারছি না। এদিকে গ্রাহকগনের হাত থেকে বাঁচার জন্য দায়িত্বরত ম্যানেজার জিন্না সুকৌশলে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে চলে যান। বর্তমানে খলিলুর রহমান খলিল নামের সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তা এই ব্যাংকে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন।
এ ব্যাপারে নতুন দায়িত্বরত ম্যানেজার খলিলুর রহমান খলিল এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই ব্যাংকের নিয়ম ছিল, প্রত্যেক উপজেলার জমাকৃত টাকা ঐ উপজেলাতেই আদান প্রদান করতে হবে। কিন্তু পূর্বের ম্যানেজার নিজের ছেলের নামে লোন পাস করানোর জন্য এবং নিজের প্রমোশনের জন্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের খুশি করতে তাদের নির্দেশ মোতাবেক গ্রাহকের জমাকৃত টাকা গুলো হেড অফিসে পাঠিয়ে দিয়েছেন কিন্তু সে টাকা ভূরুঙ্গামারী শাখাতে আর ফেরৎ আনতে পারে নি। এই শাখা থেকে প্রায় ৬৮ লাখ টাকা হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে। তবে ব্যাংক টাকা ফেরৎ দিবে মর্মে আশাবাদী কারন ব্যাংক মালিক তাজুল ইসলামের নামে হাই কোর্টে একটি মামলা হয়েছে, এবং মামলাটি চলমান আছে। মামলায় রেজাল্ট কি আসে আমরা সেই অপেক্ষায় আছি। তিনি আরও জানান এই ব্যাংকের অফিস ভাড়া বাকী পড়েছে দুই লক্ষ উনষাট হাজার টাকা। ঘর মালিক বার বার
ভাড়ার টাকার জন্য তাগিদ দিচ্ছে আমি কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা।
গ্রাহকদের জমাকৃত টাকার বিষয়ে পূর্বের ম্যানেজার জিন্নার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, গ্রাহকের জমাকৃত টাকা পাঠাতে হেড অফিস থেকে আমাকে প্রতিনিয়ত চাপ দিতো। তাই হেড অফিসে টাকা পাঠানো ছাড়া আমার কোন উপায় ছিল না।