মোঃ মিনারুল, ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক: থানার নাম শুনলে যে কারো মনে আতংক বিরাজ করে। সাধারণত অপরাধিদের মনে তো দাগ কাটেই, সাধারণ মানুষের মনেও ভীতি কাজ করে থাকে। বগুড়ার শিবগঞ্জ থানায় দেখা গেছে অন্যচিত্র। ফুল বাগান করে প্রশংসায় ভাসছেন ওসি আব্দুর রউফ। সদর দরজা (মেইন গেট) দিয়ে শিবগঞ্জ থানায় প্রবেশ করতে যে কারো চোখ পড়ে থানার পূর্বদিকে দৃষ্টিনন্দন একটি ফুল বাগান। সঙ্গে সঙ্গে আটকে যায় ফুলের সৌন্দর্য্য ও সুভাশে। যেন ফুলগুলি ডাকছে সেলফি তোলতে। ফুল ও ফুলের সুবাসকে ভালোবাসে না এমন মানুষ পাওয়াই দুঃস্কর। শিবগঞ্জ থানা পুলিশ অপরাধিদেরকে প্রায় সময়ই গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। আটককৃতদের পরিবারের লোকজন ও আত্মীয় স্বজন কেঁদে কেঁদে থানার প্রবেশ করার পর পরই তাদের চোখে আর পানি দেখা যায় না। কারণ থানার ভিতরে ছোট্ট বাগানের ফুলের সৌন্দর্য্য তাদেরকে প্রিয় মানুষের কথা মুহুর্তেই ভুলিয়ে দেয়। যেন তাদেরকে সেলফি তোলার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন ছোট্টা ফুল বাগান। শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রউফ বিগত ১১ জুন ২০২৩ সালে থানায় যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর থেকে থানায় এলাকায় বাল্য বিবাহ রোধ, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, চুরি ছিন্তাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড কমিয়েছে ও এর পাশাপাশি তিনি থানার সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য দৃষ্টিনন্দন ফুল বাগান তৈরী করেন। ফুল বাগানে শোভা পেয়েছে হলুদ গাঁধা, গোলাপ ফুলসহ নানা জাতের ফুলের গাছ। ঋতুরাজ বসন্তে থানার ছোট বাগানটিতে ফুল ফুটেছে। থানায় আগতদের স্বাগত জানাচ্ছে ফুলের সৌন্দর্য্য ও সুবাস। থানায় আগত বানাইল গ্রামের আব্দুস ছাত্তার বলেন, থানার কথা শুনে মনে ভয় পাই। কিন্তু থানায় প্রবেশ করেই ফুল দেখে আমি শান্তি পাই এবং ফুল দেখতে আমাকে ভালো লাগে। বাদলাদিঘী গ্রামের রেজাউল করিম বলেন, ইতিপূর্বে থানায় এসেছি আমাকে ভালো লাগেনি। কিন্তু আজ থানায় এসে দেখি থানার ভিতরে ফুল ফুটেছে। আমি ফুলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছি। যিনি ফুল বাগান করেছে। তিনি একজন ফুল প্রেমিক, তা না হলে এতো সুন্দর বাগান করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। পুলিশ পরিদর্শক (এস.আই) বলেন, শিবগঞ্জ থানা একটি সাজানো গোছানো ও পরিপাটি। থানার ভিতরে ফুল বাগান থাকায় আমাদের মনে হয় কোন একটি পার্কে ভিতরে রয়েছি। ফুলের সুন্দর আমাদেরকে আকৃষ্ট করে। থানায় আসা অনেকেই ফুল বাগানের ফুলের সাথে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়। আমরা যখন থানার বাহিরে দায়িত্ব শেষে করে থানায় প্রবেশ করেই ফুলের বাগানের দিকে দৃষ্টি দেই তখনই আমাদের মন্টা জুড়িয়ে যায়। মনে হয় কোন একটি পার্কে বেড়াতে এসেছি। পুলিশ পরিদর্শক (এস.আই) ব্রুজেন ও বেলাল বলেন, থানা এলাকায় দায়িত্ব পালন করে থানার ভিতরে প্রবেশ করে ফুল দেখে ও ফুলের গন্ধে মন্টা ভালো হয়ে যায়। অনেক সময় মন খারাপ থাকলে ফুল বাগানের ভিতরে পায়চারি করি। শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রউফ বলেন, ফুল আমার ভালো লাগে। আমি যোগদানের পূর্বে এই বাগানের জায়গা ছিলো অপরিষ্কার ও নোংড়া। আমি থানার সুন্দর্য্য বর্ধনের জন্য ফল বাগান করেছি। বাগানের ফুল ফোটার কারণে থানার সুন্দর্য্য বৃদ্ধি পেয়েছে। থানায় প্রবেশ করলেই ফুলের সুন্দর্য্য মন কাড়ছে ও ফুলের সুবাস মনকে আনন্দ দিচ্ছে।