কে.এম. হাছান: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ৩৪ বছর বয়সী যুবক বোরহান উদ্দিন জন্ম থেকে কিশোর বয়সে পর্যন্ত ছিলেন সমাজের অন্যান্যদের মতো সুস্থ্য স্বাবাবিক, হঠাৎ গত ১২ বছর পূর্বে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবন্ধী হয়ে যায় সে। কনো মতে চলতে পারলেও হয়ে যায় ঘাড় বাঁকা। নিজের মাথা হাতে নিয়ে চলাফেরা করতে হয় তাকে। বাবা দিনমজুর থাকায় অভাব-অনটনের সংসারে তার চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি। এভাবেই কিশোর থেকে বেড়ে উঠেছে বোরহান উদ্দিন। তবে ভিক্ষা বৃত্তি বা কারো বোঝা হয়ে নয়, মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকতে চায় বোরহান। বাবা-মা ও ৩ ভাই বোনের সংসারে বোরহান উদ্দিন সবার ছোট, স্বল্প আয়ের সংসারে ভাইয়েরা বিয়ে করে কোন মতে পরিবার নিয়ে বেচে থাকলেও বর্তমানে স্ত্রী বাবা-মাকে নিয়ে বোরহান উদ্দিনের জীবন সংসার। সে কারো কাঁধের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। লেখাপড়া না শিখলেও হিসেবে বেশ পারদর্শী। তাই বাড়ির সামনে ছোট টিনের ছাউনির মধ্যে চকলেট-বিস্কুটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করে উপার্জন করছে। দরিদ্র পরিবারের প্রতিবন্ধীরা ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নিলেও বোরহান উদ্দিন ব্যতিক্রম। মানুষের কাছে হাত পেতে সাহায্য নিতে চায় না। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন বোয়ালিয়া এলাকার তপুর আহমেদ’র ছেলে আত্মপ্রত্যয়ী বোরহান উদ্দিন স্বপ্ন দেখেন ছোট পরিসরে হলেও ব্যবসা করে নিজের ভরন-পোষণ নির্বাহ করতে। রাস্তার পাশে নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় টিনের চাউনি পেতে চকলেট,বিস্কুট, চিপস, আচারসহ হরেক রকমের মালামালের পসরা দিয়ে দোকান পেতেছে। এলাকার শিশু-কিশোররা তার খদ্দের। যা বেচাকেনা হয় দিন শেষে বাবা মায়ের হাতে তুলে দেন। বোরহান উদ্দিন বলেন, সংসারে অভাব থাকলেও কখনো মানুষের কাছে হাত পেতে সহযোগিতা চাইনি। প্রবল ইচ্ছা শক্তিকে পুঁজি করে সামনে এগিয়ে যেতে চান বোরহান উদ্দিন। তাই ভিক্ষাবৃত্তির দিকে না গিয়ে শুরু করেছেন এই দোকান। এলাকার কয়েকজন ভাইয়েরা মিলে দোকান করে দিয়েছেন এতেই আমি সন্তুষ্ট। দোকানে প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেচাকেনা হয়। টাকা পয়সা থাকলে আরো ভালোভাবে দোকানে মালামাল উঠিয়ে বেচাকেনা করতে পারতাম। দোকানটি আরও বড় হবে বলে তার আশা। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, মনোবল ও আত্মপ্রত্যয় থাকলে স্বাবলম্বী হতে পারে বলে বোরহান জানিয়েছে। বোরহান উদ্দিন সমাজের বৃত্তবানদের দৃষ্টি কামনা করছেন, তার ব্যাক্তিগত মোবাইল ও বিকাশ নং 01791-591662