প্রিন্ট এর তারিখঃ রবিবার ৫ অক্টোবর, ২০২৫ ২০ আশ্বিন, ১৪৩২ ১২ রবিউস সানি, ১৪৪৭

ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইলের শাড়িকে জিআই পণ্য ঘোষণা করেছে সরকার:

শুভসাহা, বিশেষ প্রতিনিধি: বাংলাদেশে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’র স্বীকৃতি পেতে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয় মঙ্গলবার। বুধবার এটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর। ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’কে স্বীকৃতি দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি)। বুধবার শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা গণমাধ্যমকে বিষয়টি সুনিশ্চিত করেন। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ হবে বলে জানান। টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি পেতে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট,শিল্পনকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে মঙ্গলবার আবেদন করা হয়। সরজমিনে জানাযায়,টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম ই-মেইলের মাধ্যমে আবেদন ও প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ পাঠান। বুধবার মন্ত্রণালয়ে এর হার্ড কপি জমা দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পেটেন্ট, শিল্পনকশা ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর এই স্বীকৃতি দিয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয় বলছে, বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থা বা ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে (ডব্লিউআইপিও) সমস্যাটি সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে। সেখানে যাওয়ার আগে নিজেদেরকে পণ্যটিকে আগে জিআই হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। সেই ধারাবাহিকতায়,শিল্প মন্ত্রণালয় টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিল। সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা সোমবার মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকে বলেন, ‘টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি ছাড়াও মধুপুরের আনারস, নরসিংদীর লটকন, সাগর কলা; ভোলার মহিষের কাঁচা দুধের দই ইত্যাদিসহ জিআই পণ্যের স্বীকৃতির জন্য যেসব আবেদন অনিষ্পন্ন আছে সেগুলো দ্রুত সম্পাদন করতে হবে। এ বিষয়ে কোনো গাফিলতি গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আরও বলেন,এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ২১টি পণ্যকে জিআই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা থেকে এক বা একাধিক পণ্য বা বস্তু খুঁজে বের করে আবেদন করার জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ করা হয়েছে। জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির পর শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এগুলোকে ব্র্যান্ডিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হবে। সম্প্রতি,ভারতের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলা হয়- ‘টাঙ্গাইল শাড়ি, পশ্চিমবঙ্গ থেকে উদ্ভূত, একটি ঐতিহ্যবাহী হাতে বোনা মাস্টার পিস। এর মিহি গঠন, বৈচিত্র্যময় রং এবং সূক্ষ্ম জামদানি মোটিফের জন্য বিখ্যাত। এটি এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। টাঙ্গাইলের প্রতিটি শাড়ি ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সৌন্দর্যের মেলবন্ধনে দক্ষ কারুকার্যের নিদর্শন।’ এরপর থেকে টাঙ্গাইলসহ সারাদেশে ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ইতোমধ্যে টাঙ্গাইলে প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচিও পালিত হয়েছে। বাংলাদেশের নেটিজেনদের অনেকে কমেন্ট করে জানান, বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলা থেকেই টাঙ্গাইল শাড়ির নামটি এসেছে। অন্যরা লিখেন, ভারতের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় হয়তো শাড়ির নাম ভুল লিখেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বলেন, ‘বাংলাদেশে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) পেটেন্ট পেতে জরুরিভিত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রণালয়ে আমরা জরুরিভাবে এ বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সাথে মিটিং করে নির্দেশনা দিয়েছি।’ উল্লেখ্য,বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে জিআই পণ্য। তাই কোনো একটি পণ্যকে এর তালিকাভুক্ত করতে মুখিয়ে থাকে দেশগুলো। কিন্তু জটিলতা বাঁধে যখন একই পণ্যকে একাধিক দেশ নিজেদের বলে দাবি করে। টাঙ্গাইল শাড়ির ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটাই ঘটেছে। অথচ টাঙ্গাইল শাড়ির রয়েছে সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও ইতিহাস, এটি বাংলাদেশের প্রাচীন কুটির শিল্পের অন্যতম প্রতিনিধিত্বমূলক পণ্য। ব্রিটিশ আমলেও এর অস্তিত্বের নিদর্শন পাওয়া যায়। উনিশ শতকের শেষের দিকে এর ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটে বলে তথ্য সুনিশ্চিত করা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ আনছারুজ্জামান (রেজুয়ান ইসলাম).এম এ,মোবাইল নং- 01717934449 অথবা 01711420076,সহ-সম্পাদক:   ইয়ামিন হাসান-01710524903,বার্তা সম্পাদক: ফারুক হোসেন,সহ-বার্তা সম্পাদক: জাফর ইকবাল রানা।

টি.এল নম্বর: 00078/2026

বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃফলিয়া দিগর (বটতলা) বাজার,কামালের পাড়া,সাঘাটা,গাইবান্ধা।

প্রিন্ট করুন