শিল্পী আক্তার রংপুর
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৪ ঘটিকায় রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থগিত থাকা ৬টি মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই শেষে এমন সিদ্ধান্ত জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। ৬ টি সংসদীয় আসনে মনোনয়ন জমা পড়েছিল ৪৯ টি। আর যাছাই- বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৩৯ জন।বাতিল করা হয়েছে ১০ জনের মনোনয়নপত্র। যাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তারা জানিয়েছেন এর বিপরীতে তারা প্রার্থিতা ফিরে পেতে কমিশনে আপিল করবেন।
এ বিষয়ে মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থী মিঠাপুকুর উপজেলার সদ্য পদত্যাগকৃত উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সরকার জানান, যে মামলাটির তথ্য গোপনের অভিযোগে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।সে মামলায় আমার বাবার নাম ও গ্রামের নাম ভুল ছিল। এই মামলাটি নিয়ে আমাকে কখনো আদালতে হাজিরা দিতে হয়নি। এই মামলার কারণে পুলিশ আমাকে কখনো গ্রেপ্তার করেনি ও এই মামলার জন্য আমার নামে কখনো নোটিশ জারি হয়নি।২০০১ সালের করা এই মামলাটি সম্পর্কে আমার জানা ছিল না।
তিনি আরও বলেন, মামলা সংক্রান্ত তথ্য গোপনের দায়ে জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গার মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হলেও পরবর্তীতে আপিলের প্রেক্ষিতে রংপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মহোদয় আবারও পুনঃবহাল করেছে।কিন্তু একি কারণে একজনের মনোনয়ন স্থগিতের সিদ্ধান্ত বাতিল করে পুনঃবহাল হওয়ার পরও আমার মনোনয়ন কেন বাতিল করা হলো তা আমার বোধগম্য নয়।
রংপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোবাশ্বের হাসান জানান, নিয়মের বাহিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। মামলা সংক্রান্ত তথ্য গোপনের দায়ে জাকির হোসেন সরকারের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। আমরা একটি স্বচ্ছ নির্বাচন উপহার দিতে চাই রংপুরবাসীকে।
এদিকে, মনোনয়ন বাতিল ঘোষণার পরপরই জাকির হোসেন সরকারের পক্ষে বাতিলের ঘোষণা পুনঃবিবেচনার জোরালো দাবি জানান জাকির হোসেন সরকার ও তার সমর্থকরা। দীর্ঘ ৪৫ মিনিটের মতো জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে পাল্টা পাল্টি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন ও পুনঃবিবেচনার অনুরোধের প্রেক্ষিতে আবারো ইসি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে পুনঃসিদ্ধান্তের জন্য সময় নেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। সর্বশেষ সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিটে রিটার্নিং কর্মকর্তার রুম থেকে রুদ্ধদার বৈঠক শেষে বের হয়ে জাকির হোসেন সরকার জানান, জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দুঃখপ্রকাশ করে জানিয়েছেন তার মনোনয়ন পুনঃবহালের আর কোনো সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য স্থগিত হওয়া মনোনয়নপত্রের বিষয়ে সোমবার সকাল ১০ টায় রংপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে পুনঃসিদ্ধান্তের ঘোষণার কথার প্রেক্ষিতে সকাল ১০ টা থেকে জাকির হোসেন সরকার ও তার অনুসারীরা অপেক্ষা করতে থাকে।দিনভর অপেক্ষা শেষে বিকাল ৩.৩০ ঘটিকার দিকে রংপুর জেলা প্রশাসক মহোদয় কখন আসবে সম্মেলন কক্ষে এমন প্রশ্নের জবাবে রংপুরের সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের সদস্য সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলের সঙ্গে অসদাচরণ করে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুল্যাহ আল মোতাহসিম। অতঃপর দিনের কর্মঘণ্টার শেষ দিবসে বিকাল ৪ ঘটিকায় সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত হন রংপুর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।