প্রিন্ট এর তারিখঃ সোমবার ৭ই জুলাই, ২০২৫ ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ ১১ই মহর্‌রম, ১৪৪৭

৪ ঠা ডিসেম্বর সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত দিবস

উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁঃ

১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর সতীদাহ প্রথা আইন করে (রেগুলেশন XVIII , 1829) তুলে দেওয়া হয় ৷ সতীদাহ প্রথা হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে বা আত্মহুতি দেবার এক প্রথা, যা পরবর্তীকালে রাজা রামমোহন রায়ের উদ্যোগে বন্ধ হয়।এই প্রথা অনুসারে স্বেচ্ছায় স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রী তার সঙ্গে এক চিতায় পুড়ে আত্মাহুতি দেয়। পৌরাণিক কাহিনীতে এমন আত্মাহুতি উদাহরণ রয়েছে, যেমন মহাভারতে পাণ্ডুর দ্বিতীয় স্ত্রী মাদ্রী স্বামীর সঙ্গে সহমরণে গিয়েছিলেন৷ কিন্তুপরবর্তীকালে লক্ষ্য করা যায় এটা আদৌ স্বেচ্ছায় হচ্ছে না বরং জোর করে তা করা হচ্ছে ৷ বিশেষ করে কোনও ধনী লোকের মৃত্যু হলে তাঁর সম্পত্তির দখল নিতেই তার আত্মীয়রা তার সদ্যবিধবা স্ত্রীকে জোর করে স্বামীর চিতায় পুড়িয়ে মারত ৷ সতী করার জন্য তখন জোর করে বিধবাকে চিতায় তোলার সময় তার কান্নার আওয়াজকে চাপা দিতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে কাঁসর- ঘন্টার আওয়াজ করা হত ৷ তা দেখেই রামমোহন রায় এই প্রথা বিলুপ্ত করার উদ্যোগ নেন৷ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীতে সতীদাহ প্রথাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয় ১৮২৯ সালের ৪ ডিসেম্বর । সেই সময় বেঙ্গলের গভর্ণর ছিলেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক। অবশ্য এই আইনী কার্যক্রম গৃহীত হয়েছিল মূলতঃ রাজা রামমোহন রায়ের সামাজিক আন্দোলনের জন্যেই। তিনি প্রমাণ ও প্রচার করেন, এই প্রথা কেবল অমানবিকই নয়, পরন্তু অশাস্ত্রীয় ও আইনবিরুদ্ধ। লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্ক রামমোহনের যুক্তির সারবত্তা অনুভব করে আইন পাশে উদ্যোগী হন।
যদিও এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে হিন্দু সনাতনপন্থীরা লন্ডনের প্রিভি কাউন্সিলে মামলা করেছিলেন। তবে প্রিভি কাউন্সিল ১৮৩২ সালে বাংলার শাসক লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের ১৮২৯ সালের আদেশই বহাল রাখে। এরপর খুব অল্পসময়ের মধ্যে ভারতের অন্যান্য কোম্পানি শাসিত অঞ্চলেও সতীদাহ প্রথাকে বাতিল ঘোষণা করা হয়।

সম্পাদকঃ মোঃ আনছারুজ্জামান (রেজুয়ান ইসলাম) এম.এ (01711420076 অথবা 01717-934449),প্রকাশক: মো: রাজিবুল করিম রোমিও,বার্তা সম্পাদক: মো: ফারুক হোসাইন,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ফলিয়া দিগর (বটতলা) বাজার,কামালেরপাড়া,সাঘাটা,গাইবান্ধা।      

প্রিন্ট করুন