চল্লিশ পেরোনো নারীদের তারুণ্যের রহস্য

অনেক নারী আছেন যারা বেশ কয়েক বছর আগেই ৪০ এর ঘর পেরিয়েছেন। কিন্তু তারা নিজেদের চেহারায় বয়সের ছাপটা এখনও পরতে দেননি। এবার অনেকেই আছেন, যারা চল্লিশ পেরোলেই বয়সের ছাপ দূর করতে সব সময়ই সচেষ্ট থাকেন। এদের অধিকাংশরাই নিজেদের মনকে প্রফুল্ল রেখে তারুণ্যদীপ্ত থাকতে চেষ্টা করেন। কাজের ফাঁকে এরা সময় পেলেই হলো, অমনি পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে মেতে ওঠেন আনন্দ – হুল্লোড়ে। এক্ষেত্রে আরও একটি কাজ করেন তারা, এরা সযত্নে এড়িয়ে চলেন মিষ্টিজাতীয় খাবার। পাশাপাশি এদের নিয়মিত হাঁটা ও সাঁতার কাটা – তাদের সজীব রাখার গোপন কৌশল বলে জানা যায়।
প্রচলিত প্রবাদ আছে – কুড়িতে বুড়ি। এখন কিন্তু এই প্রবাদের দিন শেষ। সৌন্দর্য পিয়াসী নারীদের কাছে এই প্রবাদের গুরুত্ব ফুরিয়ে গেছে অনেক দিন আগেই। বরং এখন ৪০ বছর বয়সেও নারীরা তারুণ্যের দীপ্তি ছড়াচ্ছেন যেনো আরও বেশি বেশি। অবশ্য এই জন্য তাদের মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম। দেশের রূপবিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিদেরা জানান, খুব সহজ ৫টি নিয়ম মেনে নারীরা তাদের তারুণ্য ধরে রাখতে পারবেন।
পুষ্টিবিদদের মতে – বয়স ৩০ পার হলেই মানবদেহের স্বাভাবিক হজমপ্রক্রিয়ার গতি ধীর হতে শুরু করে। আর এই জন্য ৪০ এর দরজায় পা দেওয়ার আগেই খাওয়াদাওয়ার রাশ টানা অতি জরুরী। এই বয়সে খাবার থেকে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ যেমন কমিয়ে আনতে হবে, তেমনি প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতে হবে। কারণ, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোষের যে ক্ষয় হয়, সেটা একমাত্র প্রোটিনের সাহায্যেই পূরণ করা সম্ভব। দুধ, ডিম, মাছের পাশাপাশি মাংসও প্রোটিনের অন্যতম উৎস। অনেকেই যারা তাদের খাবারের তালিকা থেকে যে মাংস বাদ দিয়ে দেন – তাদের এটা করা একেবারেই ঠিক নয়। প্রতিটি খাবার গ্রহণের মধ্যে তিন ঘণ্টা বিরতি রাখার পাশাপাশি দিনে অন্তত পাঁচবার খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদরা। এই বিষয়ে রইলো আরও কিছু পরামর্শ।
মুখের ত্বকে চামচ থেরাপি :
প্রথমে মুখের ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এবার দুটো টেবিল চামচ দুই হাতে ধরে চোয়ালের নিচে থেকে ধীরে ধীরে ওপরের দিকে টেনে নিন। চিনা আকুপ্রেশারের এই থেরাপি মুখে প্রয়োগ করলে ধীরে ধীরে মুখ একটা সুন্দর গড়ন পাবে।
মেদ ঝরাতে হাঁটতে হবে :
শরীরকে ফিট রাখতে ও বাড়তি মেদ ঝড়াতে হাঁটার বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে রক্ত সঞ্চালন ও শারীরিক কাঠামো ঠিক রাখতে নিয়মিত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট হাঁটা ও সাঁতার কাটা চল্লিশ পেরোনো নারীদের বেশ উপকার দেয়। তাছাড়া শরীরকে ফিট রাখতে ও বাড়তি মেদ ঝড়াতে এই দুটোর বিকল্প নেই।
কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুমান :
রূপবিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জানা যায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ঘুমের গতিও কমতে থাকে। যদি ঘুম না আসে, তাহলে কোনো সুগন্ধি তেল নিয়ে মাথা, হাত ও পায়ের তালুতে ম্যাসাজ করুন। কারণ, স্নায়ুর শেষ প্রান্তগুলো এখানেই থাকে। ইদানিং সারারাত ফেসবুক চালিয়ে বা ছবি দেখে অনেকেই দীর্ঘ সময় ঘুমহীন কাটিয়ে দেন। এরা ঘুমাতে যান সেই ভোরবেলায়। এভাবে অল্প সময়ের ঘুম শরীরের ওজন বাড়িয়ে দেয়। কারণ, ঘুম কম হলে শরীরের মেটাবলিজম রেট কমে যায়। তাই তো সুস্থ ও সতেজ থাকতে প্রতিদিন রাতে আট ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।
শ্বাস অনুশীলন :
ব্রিদিং এক্সারসাইজ বা শ্বাস অনুশীলন ৪০ এর পর তারুণ্য ধরে রাখতে জাদুর মতো কাজ করে। এটা করলে চেহারায় প্রশান্তি আসে। এটা করতে ঘরের খোলা কোনো স্থান বেছে নিন। সেখানে হাত দুটোকে প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে পড়ুন। এবার চোখ বন্ধ করে নাক দিয়ে এক থেকে পাঁচ গুনতে গুনতে বুক ভরে শ্বাস নিন। এবার ধীরে ধীরে এক থেকে ১০ গুনতে গুনতে শ্বাস ছাড়ুন। সপ্তাহে পাঁচ দিন আট থেকে ১০ বার নিশ্বাস ছাড়া ও নেওয়ার এই ব্যায়াম করতে পারলে কার্যকরী ফল পাবেন। এটা স্নায়বিক দুর্বলতা কাটানোর পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতা, স্মৃতিশক্তি ও মানসিক প্রশান্তি বাড়াতে ব্যায়ামটি সাহায্য করে।