ঢাকা শনিবার ৪ অক্টোবর, ২০২৫

ঢাকা শনিবার ৪ অক্টোবর, ২০২৫

মোহনপুরে কর্মনিষ্ঠায় আলো ছড়াচ্ছেন ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা

✒ দৈনিক কলম যোদ্ধাঃ প্রকাশিত: সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২:০৭ অপরাহ্ণ

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী:

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শুধু সরকারের নীতি বাস্তবায়নকারী নন, বরং তিনি উপজেলা প্রশাসনের মূল চালিকাশক্তি। একজন দক্ষ ও দূরদর্শী ইউএনও চাইলে সমগ্র উপজেলাকে উন্নয়নের নতুন ধারায় এগিয়ে নিতে পারেন। এর বাস্তব উদাহরণ তৈরি করেছেন রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বর্তমান ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা।

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি শুধু অফিসকক্ষেই সীমাবদ্ধ থাকেননি, বরং মাঠপর্যায়ে গিয়ে সরাসরি মানুষের সমস্যা শুনে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রতিদিন অফিস সময়ের বাইরেও শিক্ষার্থী, কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের অভিযোগ শুনে তা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেন।

শিক্ষাখাতে তার কার্যক্রম প্রশংসনীয়। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেছেন তিনি। অর্থনৈতিক খাতে কৃষকদের মাঝে সার-বীজ বিতরণ ও কৃষি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম স্বচ্ছভাবে বাস্তবায়ন করেছেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়ও তিনি রেখেছেন সাহসী ভূমিকা। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, ইভটিজিং দমন ও মাদকবিরোধী অভিযানে মাঠে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাতের অন্ধকারেও গোপন অভিযানে অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে এনেছেন। পাশাপাশি অবৈধ নদী দখল ও সরকারি খাস জমি দখলমুক্ত সহ অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায়ও তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা, ত্রাণ বিতরণ ও সরকারি অনুদান প্রকৃত সুবিধাভোগীদের হাতে পৌঁছে দিতে অনিয়ম কমানোর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, “ইউএনও অফিস এখন কাগজপত্রের জটিল জায়গা নয়, বরং মানুষের সমস্যা সমাধানের কেন্দ্রবিন্দু।

প্রশাসনের কার্যকর সমন্বয়ে তিনি নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ফলে উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

কেশরহাট মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তাজরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় দায়িত্ব পালনকালে তিনি শিক্ষা ও উন্নয়নে আন্তরিক ছিলেন। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের জন্য তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়। তিনি শুধু নির্বাহী অফিসার নন, ছিলেন অভিভাবক ও পথপ্রদর্শক।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মোহনপুর উপজেলা শাখার আমির ও আত্রাই অগ্রণী ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ জিএম আব্দুল আওয়াল বলেন, তিনি সন্ত্রাস ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে আপোষহীন অফিসার। পাশাপাশি একজন পরিশ্রমী মানুষ এবং সবসময় জনসাধারণকে সম্মান দিয়ে কথা বলেন। আমার দৃষ্টিতে তিনি দুর্নীতিমুক্ত এবং মোহনপুর উপজেলার উন্নয়নে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। আমি তাঁর উত্তরোত্তর মঙ্গল কামনা করি।

মোহনপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শেখ মোঃ বানী ইয়ামিন বখতিয়ার বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকা নির-অহংকারী ও ভদ্র মানুষ, সবার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। আমাদের কলেজের মাঠে ভাঙা ইটের কারণে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলায় প্রায়ই আহত হতো। বিষয়টি জানালে তিনি টেন্ডারের মাধ্যমে মাঠ সংস্কার করে দেন। তিনি কলেজের বাইরে রাস্তায় বসা মাছের হাট স্থানান্তর এবং কলেজের মূল রাস্তাটিও সংস্কারের উদ্যোগ নেন। এছাড়া কলেজের আরও উন্নয়নে তিনি সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন। আমার দৃষ্টিতে তিনি স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল ও মানবিক একজন ভালো মানুষ।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মোহনপুর উপজেলা শাখার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আর রশিদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়শা সিদ্দিকা একজন স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল ও কর্তব্যপরায়ণ কর্মকর্তা। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি মোহনপুরের মাটি ও মানুষের কল্যাণে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তার কার্যক্রমে আমরা মোহনপুরবাসী সন্তুষ্ট। আমরা তার ভবিষ্যৎ জীবনের সাফল্য কামনা করছি।

সবচেয়ে বড় কথা, নারী হয়েও দায়িত্ব পালনে তিনি কোনোভাবেই পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে নেই। তার সততা, কর্মনিষ্ঠা ও উন্নয়নমুখী পদক্ষেপে আজ মোহনপুরের মানুষ গর্বিত। স্থানীয়রা মনে করেন, আয়শা সিদ্দিকার মতো একজন সৎ ও যোগ্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাওয়া তাদের জন্য সত্যিই আশীর্বাদ।