ঢাকা শনিবার ৪ অক্টোবর, ২০২৫
মোঃ সাগর সরকার ,স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এসএম পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের জমি বেসরকারি একটি মার্কেট মালিকের কাছে অবৈধ্যভাবে হস্তান্তরের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গতকাল রোববার (৩ আগস্ট) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত টিমের নেতৃত্ব দেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আলমগীর হোসেন, এবং তাঁর সঙ্গে ছিলেন উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (বিআরডি) আব্দুল মান্নান ও উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা আবু জাফর। তারা সরেজমিন তদন্তকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারী,অভিযোগকারি শাহ আলম সরকার, সংলগ্ন রাজিয়া চৌধুরী মার্কেটের মালিকপক্ষ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন। এর আগে, চলতি বছরের ১৬ জুন পলাশবাড়ী এস এম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মার্কেটের একটি দোকান ঘর ভেঙ্গে জায়গা জবর দখলের বিষয়টি লিখিতভাবে অভিযোগ আকারে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করেন পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি প্রবীণ সাংবাদিক শাহ আলম সরকার। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, পৌর শহরের নুনিয়াগাড়ি মৌজায়, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে অবস্থিত সরকারি জমিতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্মিত টিনশেড মার্কেট নির্মান করে দীর্ঘদিন ধরে দোকান ভাড়া দিয়ে আয় করে আসছিলেন। অভিযোগে জানা যায়, ২০২৩ সালের শেষ দিকে ওই মার্কেটের এক মোটরপার্টস ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারীর যোগসাজশে তার দোকান ঘরটি কোনো অনুমতি বা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই জমিটি সংলগ্ন রাজিয়া চৌধুরী মার্কেটের মালিককে জমিটি বেদখল করতে সহযোগিতা করলে সরকারি হাইস্কুলের কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টাকা মুল্যের জমি জায়গা বেদখল হয়ে যায়। হাইস্কুলের বেদখল হয়ে যাওয়া জায়গা জমিতে রেজিয়া চৌধুরী মার্কেটের মালিক মার্কেটের রাস্তা ও বিড়াট আকারে গেইট নির্মান করে দখল করে নিয়েছেন। তদন্তে প্রধান শিক্ষকের জবানবন্দি ও সরেজমিনে বিদ্যালয়ের জায়গা জমি বেদখলের প্রমান পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে মার্কেট মালিক সেখানে প্রবেশদ্বার (গেইট) নির্মাণসহ রাস্তা তৈরি করে পুরো জমি দখলে নেন। এর ফলে সরকারি এই বিদ্যালয়ের অন্তত অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ বেহাত হয়েছে বলে অভিযোগকারীর দাবি। এ প্রসঙ্গে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল আলম বলেন,
“প্রাপ্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সরোজমিন তদন্ত করেছে। তদন্তে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্যে বিদ্যালয়ের দোকান ঘর জায়গা জমি বেদখলের প্রমান পাওয়া গেলে তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনানুগভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন,
“বিদ্যালয়ের মূল্যবান সম্পত্তি যদি বেহাত হয়ে থাকে, তাহলে তা অবশ্যই উদ্ধার করা হবে। প্রধান শিক্ষক যদি আগে লিখিতভাবে অভিযোগ করতেন, তাহলে আরও আগেই সরকারিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হতো।”
এ ঘটনায় স্থানীয় জনমনে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত সরকারি সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :