ঢাকা বুধবার ২৫শে জুন, ২০২৫

ঢাকা বুধবার ২৫শে জুন, ২০২৫

রাজৈরে প্রবাসীর রহস্যজনক মৃত্যু,হাসপাতালে লাশ ফেলে পালালো স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন

✒ মো: আরী শেখ,স্টাফ রিপোর্টার : প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ১১:৩৯ অপরাহ্ণ

মো: আরী শেখ,স্টাফ রিপোর্টার : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইতালি ফেরত প্রবাসী হালিম খানের মরদেহ ফেলে পালিয়েছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। পরিবারের অভিযোগ, হালিমকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত হালিম খান রাজৈর উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নের নগর গোয়ালদি গ্রামের মৃত কলম খানের ছেলে। ঘটনার পর রাজৈর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় চার বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে হালিমের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে হয় একই উপজেলার উত্তর দারাদিয়া গ্রামের সোমেদ চৌকিদারের মেয়ে রেশমা বেগমের। বিয়ের পর রেশমার পরিবারকে বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকা দেন হালিম খান। এছাড়া প্রবাস থেকে নিজের জন্য মোটরসাইকেল কিনতে টাকা পাঠালেও তা শ্যালক সবুজ চৌকিদারের নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয়।

সম্প্রতি ইতালি থেকে দেশে ফিরে হালিম তার অর্থ ও মোটরসাইকেল ফেরত চাইলে স্ত্রী রেশমা ও তার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এক পর্যায়ে সোমবার (২৩ জুন) রাতে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পরদিন সকালে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান রেশমা ও তার পরিবারের সদস্যরা।

এ বিষয়ে নিহত হালিমের প্রথম পক্ষের কন্যা হিমু আক্তার বলেন, “আমার বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার শরীরজুড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমি হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”

নিহতের বড় ভাই আব্দুর রাজ্জাক খান অভিযোগ করে বলেন, “রেশমার সঙ্গে তার আগের স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল। আমার ভাই সেই সম্পর্ক ধরে ফেলেছিল। ওর নয় বছরের কষ্টার্জিত অর্থ আত্মসাৎ করেছে ওই পরিবার। এমনকি শখ করে কেনা মোটরসাইকেলও তার শালার নামে করে দিয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে রাতে ঝামেলা হয়, আর সকালে লাশ পাওয়া যায়।”

এ বিষয়ে রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান বলেন, “ঘটনাটি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”

নিহতের পরিবার দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।