ঢাকা রবিবার ৫ অক্টোবর, ২০২৫
মোঃ মিনারুল ইসলাম ,নিজস্ব প্রতিবেদক: কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ফের প্রাণ ফিরে পেয়েছে বগুড়ার কামারপাড়া গুলো। শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই ছুরি, দা, বঁটি, চাপাতি তৈরির ধুপধাপ শব্দে গমগম করছে কামারপাড়া। কামারদের ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জামের চাহিদা মেটাতে দিন-রাত পরিশ্রম করছেন তারা। বগুড়া শহরের কামারপাড়া ছাড়াও শিবগঞ্জ, গাবতলী উপজেলার দক্ষিণপাড়া ইউনিয়নের কৃষ্ণচন্দ্রপুরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত কামারশালা গুলোতেও চলছে একই দৃশ্য। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঘাম ঝরাচ্ছেন কামাররা। চোখেমুখে তাদের ক্লান্তি থাকলেও ঈদ মৌসুমে বাড়তি আয়ের আশায় তারা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বংশপরম্পরায় এই পেশায় নিয়োজিত কামার পরিবারগুলো বছরের বেশিরভাগ সময় কাজের সংকটে থাকলেও কোরবানির ঈদে আসে স্বস্তির নিঃশ্বাস। কামার নরেশ বাবু বলেন, সারা বছর তেমন কাজ থাকে না। এই ঈদের সময়টায় আমাদের রুজি-রোজগার হয়। তাই এখন সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত একটানা কাজ করছি। তিনি আরও জানান, ছুরি, দা, বঁটি ও চাপাতি তৈরির পাশাপাশি অনেক ক্রেতা এখন বিশেষ ডিজাইনের ধারালো সরঞ্জামের অর্ডার দিচ্ছেন। ফলে কারিগরদের সময় দিতে হচ্ছে বেশি, কিন্তু তাতে আপত্তি নেই তাদের। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী এবার ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের দা, ছুরি এবং হাড় কাটার চাপাতি বেশি তৈরি হচ্ছে। লোহার মান, ধার এবং হাতলের ধরন অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। স্থানীয় ক্রেতা জুয়েল রানা বলেন, বাজারে অনেক রকমের দা-ছুরি পাওয়া যায়, কিন্তু কামারদের তৈরি জিনিসের ধার আলাদা। টেকসই, হাতের কাজ, তাই আমরা তাদের থেকেই কিনি। তবে এবারের মৌসুমে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা বিপাকে পড়েছেন কামাররা। কামার হরেন চন্দ্র দাস জানান, লোহার দাম বেড়েছে, কয়লা, হাতল তৈরির কাঠ সবকিছুরই দাম বেশি। ফলে ছুরি-বঁটির দাম কিছুটা বাড়াতে হয়েছে। আগে যে দা বিক্রি করতাম ৩০০ টাকায়, এখন সেটার দাম পড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। অনেক কামার বলছেন, তাদের পেশাটি আজও অবহেলিত। তারা চান সরকারি বা স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের সহায়তা। তাহলে তারা আরও মানসম্মত ও আধুনিক পণ্য তৈরি করতে পারবেন।
আপনার মতামত লিখুন :