শিরিন ,গাইবান্ধা প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় জাহাঙ্গীর আলম (৫৭) নামে এক জামায়াত নেতার বাড়িতে হামলা ও পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৭ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেফতারসহ বিচার দাাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার। সোমবার (৫ মে) দুপুরে সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির উঠানে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলম জামালপুর ইউনিয়ন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের (জামায়াতে ইসলামির সংযুক্ত) সাবেক সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ইমরান মিয়া বলেন, রাজনৈতিক ও পূর্ব বিরোধের জেরে গত ২৮ এপ্রিল দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে লাঠিসোডা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বসতবাড়িতে হামলা করে শহিদুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর মিয়াসহ তাদের সঙ্গে থাকা লোকজন। পরে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বসতঘর ও গোয়াল ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয়। আগুনে দুটি ঘর, আসবাপত্র পুড়ে ছাইসহ একটি গরুর মৃত্যু হয়। এসময় তিনটি গরুসহ তার বাবা জাহাঙ্গীর আলম দগ্ধ হয়ে এখনো হাসপাতালে ভর্র্তি আছেন। সংবাদ সম্মেলনে ইমরান মিয়া আরও বলেন, তার বাবা জাহাঙ্গীর আলমসহ পরিবারের লোকজন জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত। এ কারণে পরিকল্পিতভাবে ভাবে তাদের বসতবাড়িতে হামলার পর আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। জড়িত সকলেই বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামীলীগের সক্রিয় নেতাকর্মী ও সমর্থক। দীর্ঘদিন ধরে তারা দলীয় প্রভাব ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমাদের পরিবারের সঙ্গে শত্রুতা পোষন করে আসছিলেন। এসময় ইমরান মিয়া অভিযোগ করে বলেন, জামালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক শহিদুল ইসলাম ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে হামলা ও আগুনের ঘটনায় জড়িত শ্রীকলা গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়া, হোসেন আলী ফকির, আমজাদ মিয়া, আব্দুল জোব্বার, আতাউর মিয়া ও মোকাব্বর মিয়াসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৭-৮ জন। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও এখনো মামলা নেয়নি পুলিশ। দ্রুত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত ছিলন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাদুল্লাপুর উপজেলা শাখার তরবীয়ত সেক্রেটারী মুফতি মাওলানা শফিউজ্জামান সুমন, জামালপুর ইউনিয়ন শাখার সেক্রেটারী মাওলানা সামছুজ্জামান একরাম, ওয়ার্ড সভাপতি শাফিউল আলম বকু ও ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীরের স্ত্রী পারুল বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, জামায়াত নেতার জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে হামলা ও আগুনের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগটি তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত জামালপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক শহিদুল ইসলাম ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে। এমনকি তাদের মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
আপনার মতামত লিখুন :