সাঘাটা গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা বিভিন্ন পয়েন্টে যমুনা নদীর কোল ঘেঁষে রাতদিন ধরে এলাকায় জোড়ায় -জোড়ায় বাল্কহেড বসিয়ে অবৈধভাবে ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে বতর্মান সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন সুইট ও তার ছোট ভাই সুজাউদৌল্যা সুজা সহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে। তারই সুত্র ধরে বৃহস্পতিবার সকল ১০ টায় সাঘাটা থানার সামনে এলাকাবাসী ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বতর্মান চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বক্তব্যদের দাবী যমুনা নদীতে দিন রাত অবৈধভাবে বালু তুলে রাতা রাতি বালুর পাহাড় গড়ে তুলছেন অবৈধ বালু উত্তোলনকরী মহল। প্রতিদন দিনের আলো ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাক-ট্রলির আগমন বালির স্তূপ আবার নাই হয়ে যাচ্ছে পূর্বের ঠিক করা গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন ওই বালু খেকোরা, এভাবে একযুগ ধরে অবৈধ বালু উত্তোলন করে আসছেন চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন সুইট এবং তার ভাই সুজাউদদৌলা সুজার গুন্ডা বাহিনী । ইতিপূর্বে তাদের বিরুদ্ধে এলাকাবাসির অভিযোগ জোড়ালোভাবে উঠেছে । বতর্মান চেয়ারম্যান সুইট-সুজা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থেকে ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। তারা সব সময় তার নিজস্ব গুণ্ডা বাহিনী নিয়ে বিভিন্ন লোকজন উপর হামলা মামলা দিয়ে অত্যাচারে পুরো উপজেলাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে, ভয়ে কেউ তাদের অপকর্ম নিয়ে কথা বলতে পারে না। কথা বললেই তাদের নিজস্ব আদালতে তুলে নেয়া হয়। সেখানে চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। তার শেল্টারেই দুই ভাই তাদের নিজস্ব বলয় তৈরি করেন । সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা প্রায় বিলুপ্ত হলেও দুই এক জন চুনোপুটি নেতার দাপট বিন্দুমাত্র কমেনি। দীর্ঘদিন তারা যমুনায় প্রতিদিন অবৈধভাবে প্রায় ১০ লাখ টাকার বালি উত্তোলন করে প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন। নদীর কিনারায় বালি উত্তোলন এবং লোড-আনলোড করার ফলে বহু ফসলি জমি ভেঙে নদীগর্ভে চলে গেছে এখন ক্ষতির শিকার এলাকাবাসী এসব মুখ বুজে সহ্য করে যাচ্ছে। প্রশাসনকে বলে একযুগেও কোনো সমাধান পায়নি কেউ। উল্টো যারা বালি উত্তোলনে বাধা দিয়েছেন তাদেরকেই নির্যাতন, হয়রানি করেছে পুলিশ প্রশাসন। স্থানীয় বাঁশহাটা গ্রামের তরুণ সোহেল রানা যায়যায়দিন কে জানান সুইট চেয়ারম্যান এবং তার ভাই সুজা দীর্ঘ বারো বছর ধরে অবৈধভাবে যমুনা থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে। তাদের এমন অবৈধ কাজে বাধা দিলে উল্টো বিপদে পড়তে হয়েছে। তাদের গুণ্ডাবাহিনী বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নানা ভাবে নির্যাতন করে। ফলে এখন আর কেউ কথা বলার সহস পায় না তাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় শরীফ ইসলাম বলেন, সুইট-সুজা যমুনা থেকে বালু উত্তোলন করেই ক্ষান্ত হয়নি, তারা চরের একরের পর একর জমি তারা নিজেদের দখল করে ফসল বিক্রি করে নেয়। বন্যার পরে কাশফুলের ক্ষেত কোটি টাকায় বিক্রি করে। জমির মালিকরা প্রতিবাদটুকুও করতে পারে না, ওই এলাকায় গেলে কিছু মহিলা দল বেঁধে সাংবাদিকের কাছে আসেন কষ্টের কথা বলতেন তারা নাম প্রকাশে ভয় পায়। বিষয়টি নিয়ে সুজাউদদৌলা সুজার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের জন্য এসব বালু তোলা হচ্ছে। বালি অন্য জায়গায় বিক্রি হচ্ছে সেটি তিনি অস্বীকার করেন। পরে এলাকার মানুষদের অত্যাচার করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ভাই বার বার এখানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। যদি অত্যাচার করতো তাহলে তিনি চেয়ারম্যান হতে পারতো না। এ সময় তিনি গর্ব করে বলেন, আমরা খারাপ হলে আমাদের নামে মামলা থাকতো। আপনি খোঁজ নিয়ে দেখেন আমাদের নামে একটি মামলাও নেই। সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন সুইটের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান। সাঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি মাত্র কয়েকদিন আগে এখানে যোগদান করেছি। তখন দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ছিল। এখন এসব বিষয়ে অভিযান শুরু হবে আশা করি সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসাহাক আলী যায়যায়দিন কে বলেন, আমরা এর আগে দুইবার সেখানে অভিযান চালিয়েছি। তাদের বসানো বাল্কহেড পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছি। এখন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না তারপর আমরা ওখানে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সাধারণ জনগণ প্রশাসনের বিরুদ্ধে যা বলেছে তা ঠিক নয় বলে তিনি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :