ঐশিগ্রন্থ আল কুরআনে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- অর্থ- “হে আদম সন্তানেরা। তোমরা প্রত্যেক সালাতে সুন্দর পোশাক পরিধান কর, খাও এবং পান কর। তবে অপচয় করো না। কেননা, তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না।” {সুরা আরাফ, আয়াত-৩১} এই আয়াতের আলোকে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণে মুসলমানের নীতি হবে মনের চাহিদায় নয়, বরং শরীরের চাহিদা অনুযায়ী খাবে; যাতে সে দুনিয়ার পেশাগত কার্যক্রম ও ইবাদত বন্দেগি স্বাভাবিক ভাবে করতে পারে। পক্ষান্তরে অবিশ্বাসী মনের চাহিদা পূরণে খাবার গ্রহণ করে। প্রিয় নবিজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “মুমিন খায় এক পেটে, আর কাফির ও মুনাফিক খায় সাত পেটে”। {সহিহ বুখারি, হাদিস- ৫৩৯৪। হাদিসটি সহিহ।} সুতরাং যে শারীরিক সুস্থতা চাইবে, সে খাদ্য ও পানীয় দ্বারা পেট ভর্তি করবে না। সাহাবি মিকদাম ইবনে মাদি কারিবা আল-কিন্দী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি নবিজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, পেটের চেয়ে মন্দ কোনো পাত্র মানুষ ভরাট করে না। পিঠের মেরুদণ্ড সোজা রাখার মতো কয়েক লোকমা খানাই আদম সন্তানের জন্য যথেষ্ট। এবং একান্ত যদি খেতেই হয় তাহলে পেটের এক-তৃতীয়াংশ খানার জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানির জন্য অন্য তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য রাখবে। {জামিউত তিরমিজি, হাদিস-২৩৮০। হাদিসটি সহিহ।} অভিজ্ঞ আলেমগণ বলেন, পরিমিত খাবার শুধু শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করে না, বরং হৃদয়কে বিগলিত করে, ইবাদত বন্দেগিতে উৎসাহিত করে। আর অপরিমিত খাবার শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি হৃদয়কে শক্ত করে তোলে। ফলে ইবাদত বন্দেগিতে অমনোযোগী হয়। তাই খাবার গ্রহণে মুসলিমদের সতর্ক হতে হবে। রকমারি খাবারে মুগ্ধ হয়ে বেশি খাবার গ্রহণের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। রকমারি খাবারের আয়োজন নিয়ে বিশ্বনবীর ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। সাহাবি আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহ আলাহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার উম্মতের মধ্য থেকে এমন লোকদের আবির্ভাব ঘটবে, যারা খাবে রকমারি খাবার, পান করবে রকমারি পানীয়, পরিধান করবে রকমারি পোশাক এবং তারা আবোল-তাবোল বকবে। এরাই হবে আমার উম্মতের নিকৃষ্টতম লোক। [আস সহিহা, হাদিস-২২৬৫] জুবায়ের ইবনে সাঈদ ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরি।
আপনার মতামত লিখুন :