ঢাকা রবিবার ৫ অক্টোবর, ২০২৫

ঢাকা রবিবার ৫ অক্টোবর, ২০২৫

কুমিল্লা সিটি মেয়র পদে উপ-নির্বাচন নির্বাচনী প্রচারণায় নানা অভিযোগ প্রার্থীদের

ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: রবিবার, ৩ মার্চ, ২০২৪, ৯:৪৯ অপরাহ্ণ

মোঃ মাহাবুব আলম,স্টফ রিপোর্টারঃ কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচারণা ততই বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে অভিযোগ পাল্টা-অভিযোগ। বিরামহীন প্রচারণার ফাঁকে গণমাধ্যমের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে তিন প্রার্থীই পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, প্রচারণায় বাধা, হুমকি-ধমকি ও হামলার অভিযোগ আনছেন।

আগামী ৯ মার্চ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে মোট চারজন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে কুমিল্লা মহানগরী। প্রার্থীদের গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও গানে গানে প্রচারণায় সর্বত্রই নির্বাচনী উৎসবের আমেজ। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী।
প্রচারণার ৯ম দিনে শনিবার (২ মার্চ) গণসংযোগসহ ৪ প্রার্থী প্রচারণা ও উঠান বৈঠক করছেন নগরীর বিভিন্ন এলাকায়।
শনিবার সকাল থেকে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী বিএনপির সাবেক নেতা ও দুইবারের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু নগরীর চকবার থেকে কান্দিরপাড় এলাকায় গণসংযোগ করেন। অপরদিকে বাস প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসিন বাহার সূচনা প্রচারণা চালান চকবাজার ও কাঁটাবিল এলাকায় ।
এদিন ঘোড়া প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন কায়সার প্রচারণা চালান নগরীর ফৌজদারি এলাকায় এবং হাতি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মহানগর আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা নূর -উর রহমান মাহমুদ তানিম প্রচারণা চালান নগরীর রাজগঞ্জ এলাকা।
এদিন প্রচারণায় নেমে ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু অভিযোগ করেন আগের দিন শুক্রবার বিকালে নগরীর ১৫নং ওয়ার্ড এলাকায় তার উঠান বৈঠকে হামলা ও ভাংচুর চালানো হয়েছে। সাক্কু দাবি করেন ১৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল বিন জলিলের উপস্থিতিতে শুক্রবার বিকেলে নগরীর কাটাবিল ও বালুধুম এলাকায় উঠান বৈঠকে হামলা করে চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর ও পোস্টার ব্যনার ছিড়ে ফেলা হয়। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে কাউন্সিল সাইফুল বিন জলিল বলেন, আমি বাস মার্কার প্রচারণা চালানোর সময় হঠাৎই চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ পাই। গিয়ে দেখি ঘড়ি প্রতীক আর ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীরা মারামারিতে জড়িয়েছে। আমি কাউন্সিলর হিসেবে সেখানে গিয়ে বিষয়টি শান্ত করি।
এ বিষয়ে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ঘটনাস্থলে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর কোনো সমর্থক ছিলো না। মূলত বাস প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক সাইফুলসহ অন্যরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার কাছে সবকিছুর প্রমাণ আছে, আমি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করবো।
শনিবার প্রচারণার সময় আরেক মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার অভিযোগ করেন, বিভিন্ন জায়গার আমার ঘোড়া প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ওই জায়গা আরেকটা প্রতীকের পোস্টার লাগানো হচ্ছে। রাতের বেলায় মানুষের বাসায় বাসায় গিয়ে ভয়ভীতি দোখানো হচ্ছে। আমরা চাই এসব বন্ধ হোক, নির্বাচনের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় থাকুক।
হাতি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম বলেন, পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ভয়-ভীতি দেখানো এবং হুমকি প্রদর্শন দিন দিন বাড়তে থাকবে। এই সময়ে এসে যদি নির্বাচন কমিশন দৃঢ়তা দেখাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ৯ তারিখের নির্বাচন একটি প্রহসনে পরিণত হবে। আমার দাবি, যারা ভাংচুর করছে, পোস্টার ছিঁড়ছে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। তারা সবাই চিহ্নিত, তারাই ঘুরে ঘুরে সব জায়গায় হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমি জানি না তাদের প্রার্থী তাদেরকে এ ধরনের নির্দেশ দিয়েছে কি না। আমার মতে কোনো প্রার্থীই চায় না নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হোক।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মহানগর আওয়ামী লীগ সমর্থিত বাস প্রতীকের প্রার্থী, তাহসিন বাহার সূচনা বলেন, প্রচারণায় আমি কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখের পড়িনি। কিন্তু দেখছি যে, আমার বিরুদ্ধেই সবার অনেক বেশি অভিযোগ। আমি সারাদিন কাজ করছি, অতিথি পাখির মতো হঠাৎ করে আসিনি। আগেও জনসম্পৃক্ত ছিলাম, এখনো জনসম্পৃক্ত আছি।
তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা মারামারি করে অভিযোগ তোলেন আমার উপর। এখানে দুই প্রার্থী একই দলের। তারা একজন আরেকজনকে কাদা ছুঁড়াছুঁড়ি করছে। সাক্কু সাহেব (মনিরুল হক সাক্কু) একবার অভিযোগ করছেন কায়সার (নিজাম উদ্দিন কায়সার) সাহেবকে ‘এঙ্গেল’ করে। আবার সেটা ‘ট্রাইয়েঙ্গেল’ করে আমার বাবা (এমপি বাহার) এবং আমার উপর আসছে। আবার যখন কায়সার সাহেব অভিযোগ করছে সাক্কু সাহেবকে ‘হিট’ করে; সেটাও আবার ‘ট্রাইয়েঙ্গেল’ করে আমার বাবা এবং আমার উপর আসছে। আমার মনে হয় উনাদেরকে নির্বাচনী প্রচার বন্ধ করে আগে গোলটেবিলে বসিয়ে জিজ্ঞাসা করা উচিৎ আসলে তাদের অভিযোগটা কার দিকে। প্রকৃত পক্ষে এ নির্বাচন নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই।