আহসান হাবিব শিবলু, বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লাঠিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৬০ বছর পূর্তি ও হীরক জয়ন্তী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকে দিনব্যাপী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় মুখর হয়ে ওঠে। “বন্ধুত্বের স্মৃতি, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস”—এই শ্লোগানকে ধারণ করে আয়োজিত পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানে ছিল হাসি, কান্না আর শৈশব-কৈশোরের মধুর স্মৃতিচারণ। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জননেতা মোরশেদ মিল্টন। তিনি বলেন, লাঠিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেবল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি এই অঞ্চলের আলোকবর্তিকা। ৬০ বছরের গৌরবময় ইতিহাসে এই প্রতিষ্ঠান অসংখ্য সুনাগরিক উপহার দিয়েছে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা প্রমাণ করে, লাঠিগঞ্জ কেবল শিক্ষার নয়—মানবতার প্রতীক। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক নতুন। তিনি বলেন, লাঠিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ আমাদের হৃদয়ের অংশ। শৈশব ও কৈশোরের প্রতিটি স্মৃতি এই প্রাঙ্গণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। আজ প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এই মিলনমেলা আমাদের ঐক্য ও ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লাঠিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ রুস্তম আলী। তিনি বলেন, প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা আমাদের গর্ব। তাদের সফলতা, ভালোবাসা ও অবদানই আমাদের ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণা। অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন গাবতলী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদত হোসেন খান সাগর। বরেণ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এম আর হাসান পলাশ। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন লাঠিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি মোঃ মিনহাজুল ইসলাম। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এম আর ইসলাম রিপন, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল হাসান রুহিন, যুগ্ম আহ্বায়ক মহব্বত আলী ও মশিউর রহমান সুমন, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা, সদস্য সুমন তরফদার, উপজেলা যুবদলের নির্বাহী সদস্যবৃন্দ সোহানুর রহমান সোহাগ, আবুল বাসার, গোলাম রাব্বি, আহসানুল হক, আনোয়ার, উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা ও গাবতলী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মিলন প্রমুখ। পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন। প্রাক্তন শিক্ষার্থী মতিউর রহমান বলেন, এই মাঠে আমরা খেলেছি, ক্লাস করেছি, স্বপ্ন দেখেছি। আজ আবার সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে শৈশবের দিনগুলো ফিরে পেলাম।প্রাক্তন ছাত্রী রুনু আক্তার বলেন,ছোটবেলার বন্ধুরা ও প্রিয় শিক্ষকদের দেখা পেয়ে মনটা ভরে গেছে। লাঠিগঞ্জ আমাদের জীবনের আবেগের নাম।প্রাক্তন শিক্ষার্থী উজ্জ্বল বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণই আমাদের জীবনের প্রকৃত দিশারি। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা এক হয়েছি। দিনব্যাপী উৎসবে সকাল থেকে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় স্মৃতিচারণ সভা, আলোচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যায় হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। নাচ, গান ও কবিতা পরিবেশনায় অংশ নেন মতিউর রহমান, মেহেদী হাসান মানিক, সিয়াম, সালমান, সাদ্দাম, সানি, সুজন, হাকিম, লিটন, রুনু, রাজ্জাক, কাফি, উজ্জ্বল, বাবু, রতন, আরিফ, রেজাউল, সাজাদুল, ইমদাদুল, রনি প্রমুখসহ নাম না জানা অসংখ্য প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী। পুরো অনুষ্ঠানের সাফল্যের পেছনে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ছিল প্রশংসনীয়। দিনশেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ মুখরিত হয় স্মৃতিচারণ, শুভেচ্ছা বিনিময় ও ছবি তোলার উৎসবে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা প্রতিশ্রুতি দেন—লাঠিগঞ্জের এই বন্ধন আগামী প্রজন্মেও টিকে থাকবে ঐক্য, ভালোবাসা ও গৌরবের প্রতীক হয়ে।
আপনার মতামত লিখুন :