ঢাকা সোমবার ৭ই জুলাই, ২০২৫

ঢাকা সোমবার ৭ই জুলাই, ২০২৫

এনসিপি খেলার নিয়ম বদলে দিতে এসেছে, রাজনীতির নিয়ম বদলাতে হবে-নাহিদ ইসলাম

✒ দৈনিক কলম যোদ্ধাঃ প্রকাশিত: শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫, ৯:৫৯ অপরাহ্ণ

মোঃ মিনারুল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি ঃ

জাতীয় নাগরিক পার্টি কেন্দ্রীয় আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এই বগুড়া বিগত ১৫-১৬ বছর ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে রাজনৈতিক বৈষম্য শিকার হয়েছে। বগুড়ার নাম শুনলে কোথাও চাকরিতে নেওয়া হতো না। বগুড়ার নাম শুনলে তাকে কোথাও স্থান দেওয়া হতো না। বগুড়ার মানুষদের নির্বিচারে মিথ্যা ভুয়া মামলা দেওয়া হতো। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা চাই মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সবাই সমান সুযোগ পাবে। আমরা কোন বিশেষ সুবিধা ও বৈষম্য চাই না। যার যতটুকু প্রাপ্য, যে এলাকার যতটুকু পিছিয়ে আছে সেই এলাকায় ততটুকু উন্নয়ন করতে হবে। উন্নয়নের সুষম বন্টন করতে হবে। আমরা জানি এই বগুড়া একটি ঐতিহাসিক অঞ্চল। এই মহাস্থানগড় পুন্ড্রনগরী থেকে বঙ্গ সভ্যতার যাত্রা শুরু হয়েছিল। যেই সভ্যতার পদস্থলে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, এখন কেউ বলবে না এখানে এক সময় সভ্যতার সুতিকাগার ছিল। এই এলাকায় একসময় শিক্ষা, দীক্ষা, জ্ঞান ও বিজ্ঞানে পৃথিবী জুড়ে একটি বিশেষ এলাকা হিসেবে পরিচিতি ছিল। আমরা বগুড়ার সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই। হারানো ইতিহাস ও সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে চাই। বগুড়া সিটি কর্পোরেশনের দ্বারপ্রান্তে কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি শহর জুড়ে অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতা। নাগরিকদের নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দ্রুত বগুড়া বাসি যাতে সকল নাগরিক সুবিধা পায় সেই জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টি বগুড়া বাসীর সকল নাগরিক সুবিধার জন্য লড়াই করবে। জাতীয় নাগরিক পার্টির কাছে অভিযোগ আছে, বগুড়ার প্রশাসন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পরে আমাদের দাবি ছিল নিরপেক্ষ প্রশাসন নিরপেক্ষ পুলিশ এবং নিরপেক্ষ আদালত নিশ্চিত করতে হবে। যদি কেউ সেই পুরনো কায়দায় দলবাজ প্রশাসকদের মতো আচরণ করে তার পরিণতি ও ফ্যাসিস্ট মুজিব বাদীদের দোসরের মত হবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডিসি ও নির্বাচন কমিশনরের দায়িত্ব নিয়ে ভোট ডাকাতি করেছে তাদের পরিনতি ভয়ংকর হয়েছে। এই বগুড়াতে কোন দলবাজ প্রশাসককের, কোন দলবাজ পুলিশ অফিসারের স্থান হবে না। বগুড়ার প্রশাসক, পুলিশ, আইন আদালতকে নিরপেক্ষ আচরণ করতে হবে। গণমানুষের পক্ষে থাকতে হবে। কোন দলের পক্ষে থাকা যাবে না। আমরা এনসিপি বলেছি গণঅভ্যুত্থানের পর বলেছি নতুন বাংলাদেশ লাগবে, নতুন সিস্টেম লাগবে, নতুন আইন কানুন লাগবে, আপনাদের পুরনো খেলায় আমরা অংশগ্রহণ করব না। সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির রাজনীতিতে এনসিপি অংশ গ্রহণ করবে না। আমরা পুরনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হইতে আসেনি নাই। এনসিপি খেলার নিয়ম বদলে দিতে এসেছে, রাজনীতির নিয়ম বদলাতে হবে, ভালো, গ্রহণযোগ্য মানুষ ও যুব সমাজ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে বাংলাদেশের হাল ধরার জন্য। আমরা স্মরণ করছি এই বগুড়ায় যারা গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল, গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছিল, আহত হয়েছিল। আমরা শুনতে পেয়েছি আমাদের আহত ভাইয়েরা এখনো ভালো চিকিৎসা পায় নাই। এটা হতে পারে না, গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূরণ হয়েছে। দ্রুত আমাদের আহত ভাইদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন, শহীদ পরিবারদের পাশে দাঁড়ান, তাদের মর্যাদা দিন। এই জুলাই পদযাত্রা জেলা থেকে অত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে যাচ্ছে। নতুন দল এসেছে, নতুন নেতৃত্ব এসেছে। আপনাদের সামনে বিকল্প এসেছে, যে বিকল্পর খোঁজে আপনারা গত ৫৪ বছর ধরে খুঁজেছেন সেই বিকল্প নেতৃত্ব আপনাদের সামনে হাজির হয়েছে। নতুন দল এসেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এসেছে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়বে বলে জাতীয় নাগরিক পার্টি এসেছেন। শনিবার বেলা ১২টায় বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে থেকে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্র বের হয়ে শহরের থানা মোড়ে হয়ে মুক্তমঞ্চে পথসভা করে। পথসভায় নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র জুলাই সনদ নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। এই বগুড়া থেকে আমরা স্পষ্ট ভাবে বলতে চায় জুলাই ঘোষণাপত্র অবশ্যই নতুন সংবিধানে যুক্ত হবে। জুলাই কোন আবেগের বিষয় নয়, জুলাই আমাদের রাজনৈতিক ইশতেহার, আমাদের রাজনৈতিক গন্তব্য, এই জুলাইয়ের পথেই আগামীর বাংলাদেশ পরিচালিত হবে। যারা জুলাইয়ের কথা, এই শহীদদের কথা, এই আহতদের কথা সংবিধানে রাখতে চায় না, তারা মুজিববাদের নতুন পাহারাদার। মুজিব বাদের নতুন পাহারাদারকেও আমরা কিন্তু স্থান দিব না। মুজিব বাদিরা পলাতক রয়েছে, মুজিব বাদিরা ভারতে পালিয়েছে। কারণ এটা কোন বাংলাদেশী পার্টি ছিলনা। এটা একটি ভারতীয় পার্টি ছিল। গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা বলেছি ভারত, পাকিস্তানি, চীন, আমেরিকা কারো ইশারায় বাংলাদেশ পরিচালিত হবে না। বাংলাদেশের নির্বাচন, বাংলাদেশের রাজনীতি করবে বাংলাদেশের জনগণ। আগামী ৩আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরা জোর হচ্ছি, জুলাইয়ের ইশতেহার বাংলার মাটি, মানুষ, মানচিত্রের নতুন ঘোষণা পত্র নিয়ে। ৩ আগস্ট আপনাদের সাথে শহীদ মিনারে দেখা হবে। বিগত বছর যেভাবে আমরা এক দফার ঘোষণা দিয়ে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পতন ঘোষণা করেছি। এবার আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা ঘোষণা করবো। জাতীয় নাগরিক পার্টি বাংলাদেশ নতুন রাজনীতির সূচনা ঘটাবে।
পদযাত্রায় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব আখতার হোসাইন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সার্জিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনীম জারাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।