ঢাকা বুধবার ৯ই জুলাই, ২০২৫

ঢাকা বুধবার ৯ই জুলাই, ২০২৫

দক্ষিণ জাওরানী আব্দুললতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫:২৯ অপরাহ্ণ

 লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি চয়ন কুমার রায়: লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ জাওরানী আব্দুললতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক,মোঃ জসিম উদ্দিন এর ছেলে কে জিম্মি করে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ।অভিযোগ সূত্রে জানা যায, গত ২১ আগষ্ট প্রধান শিক্ষক মোঃ জসিম উদ্দিন কে তারই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র মোবাইল ফোনে স্কুলে ডেকে নিয়ে যায়।তিনি অসুস্থ থাকার কারণে সাথে তার সন্তানকে নিয়ে যায়। বিদ্যালয় যাওয়ার কিছুক্ষণ পর কিছু ছাত্র ও বহিরাগত লোকজন তার সন্তানকে জিম্মি করে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়।এই বিষয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জানায় – বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে একটি কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছে। এই ষড়যন্ত্রের মূল হোতা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজহারুল ইসলাম বাবু। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়ের পর এই বাবুর ইন্ধনে সাকিব হোসেন আমাকে কল দিয়ে নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দেয় এবং বিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয়ে আলোচনার কথা বলে আমাকে ২১ আগষ্ট,২০২৪ ইং তারিখে বিদ্যালয়ে আসতে বলে আমি অসুস্থ থাকায় আমার ছেলেকে নিয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হই। তার কিছু দিন আগে – এই সাকিব হোসেনের পিতা দুলাল হোসেনের সাথে অত্র বিদ্যালয়ের দোকান ঘরের ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। তখন থেকেই সাকিব হোসেন আমার উপর ক্ষিপ্ত। এই ঘটনার জের ধরে বিদ্যালয়ে সাকিব হোসেন বহিরাগত ছেলে জড়ো করে আমার সাথে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে বিদ্যালয়ে ত্রাস সৃষ্টি করে এবং আমার পদত্যাগের দাবি তোলে। আমি কারণ জানতে চাইলে তারা আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে, আমার হাতে আঘাত করে। এতে আমার হাত গুরুতর আহত হয়, একটি আঙ্গুল ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। আমি তখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলি, পরে জানতে পারি – স্থানীয় চিকিৎসক ঔষধ সেবন করিয়ে আমাকে সুস্থ করেছেন। এরপর এক পর্যায়ে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গলা চেপে ধরে এবং সেই মুহূর্তে সাকিব ও তার লোকজন আমাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জিম্মি করে। নিজের এবং ছেলের জীবন বাঁচাতে আমি তাদের লিখিত পত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হই। বিকেল ৫ টা ২০ মিনিটে তারা আমাকে ছেড়ে দেয়। স্থানীয় কয়েকজন লোক আমাকে নিরাপত্তা দিয়ে মাইক্রোতে করে বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেন। পরবর্তীতে জানতে পারি, সেদিন বিদ্যালয় ত্যাগ করার পর তারা বিদ্যালয়ের অফিস রুমের আসবাবপত্র ভাংচুর করে মূল্যবান নথিপত্র নিয়ে যায়। ২২ আগষ্ট,২০২৪ ইং তারিখে তারা ইউএনও মহোদয়কে পদত্যাগ পত্র জমা দেয়, আমিও আমার জোর পূর্বক পদত্যাগ পত্র লিখে নেয়ার অভিযোগ দায়ের করি। ২৫ আগষ্ট ইউএনও মহোদয় ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে ২ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন এবং ৭ দিনের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলেন। সেদিন ই তারা ইউএনও মহোদয়ের কাছে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করে। ২৭ আগষ্ট ইউএনও মহোদয় আবারো ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনায় বসেন এবং অভিযোগ গুলো মাউশি তে তদন্তের জন্য পাঠান। তিনি কোনরূপ তদন্ত না করে ২৭ আগষ্ট, ২০২৪ ইং তারিখেই আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর ২ সেপ্টেম্বর,২০২৪ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের আশেপাশে কোথাও কারো সঙ্গে মারামারি তে জড়িয়ে পড়েন। পরে জানতে পারি, তিনি আমাকে সেই মারামারির ঘটনায় অভিযুক্ত করেছেন। সেদিনই তিনি স্থানীয় থানায় আমি,আমার ছেলে এবং আমার কিছু নিকট আত্মীয়কে আসামি করে এটি মামলা দায়ের করে আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করেন। উক্ত মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। সেই ঘটনা সম্পর্কে আমার বিন্দুমাত্র কোনো ধারণা নেই। বিষয়টিতে প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টা মহদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এই বিষয়ে বতর্মান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান,২ সেপ্টেম্বর আমি বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় আমাকে আক্রমন করে জসিম উদ্দিন এর লোকজন। আমি পরে হাতীবান্ধা উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি হই।এই বিষয়ে স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান ২ সেপ্টেম্বর বোডের হাটে ওরকম কোন মারামারি হয়নি।এই বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র মোহন্ত জানন বকুল অধিকারী একটা লিখিত অভিযোগ দিছেন আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করতেছি।হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানান প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন কে সাময়িক সময়ের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে আর ২ সেপ্টেম্বর ঘটনা টির থানায় একটা লিখিত অভিযোগ করেছে।