ঢাকা মঙ্গলবার ৮ই জুলাই, ২০২৫

ঢাকা মঙ্গলবার ৮ই জুলাই, ২০২৫

নওগাঁর গাহলী গ্রামে এক অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারকে একঘয়ে করে রেখেছে সমাজপতি ইউপির মেম্বার

ডেস্ক নিউজ প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ

উজ্জ্বল কুমার সরকারঃ নওগাঁর মহাদেবপুরে অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে এক সংখ্যালঘু পরিবারকে একঘয়ে করে রেখেছে সমাজপতি ইউপি সদস্য। দরিদ্র এ সংখ্যালঘু পরিবারটি তিন সপ্তাহের অধিক সময় ধরে একঘরে হয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে। মানবেতর জীবন যাপনের এ ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের গাহলী গ্রামে। এব্যাপারে গতকাল ৩ এপ্রিল বুধবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। ওই গ্রামের দরিদ্র ভুগল চন্দ্র বর্মন বলেন, গত ১২ মার্চ দিবাগত রাত ১১ টার দিকে তার বাড়ির ভিতর স্থানীয় কয়েকজন যুবকের হৈহুল্লর সুনে তিনি তার শ্বয়ন ঘর থেকে বাহির হয়ে আসেন। এসময় তার বাড়ির বারান্দায় পাশ্ববর্তী মির্জাপুর গ্রামের জনৈক রুবেল হোসেন নামের এক যুবককে মারপিট করছে স্থানীয় ওইসব যুবক। মারপিটে অংশ নেয়া স্থানীয় যুবকরা ভুগল চন্দ্র বর্মনকে এসময় জানান, তার পুত্রবধুর সঙ্গে এ যুবক অসামাজিক কাজে জড়িত হওয়ার চেষ্টা করে। স্থানীয়রা জানান, এ খবর পেয়ে রাতেই ঘটনা স্থলে স্থানীয় ইউপি সদস্য পরিমল চন্দ্র বর্মন এবং মির্জাপুর গ্রামের জনৈক খোরশেদ আলম উপস্থিত হয় এবং অভিযুক্ত যুবককে ছেড়ে দেয়। ঘটনার রাতে ওই গৃহবধুর স্বামী ঢাকায় অবস্থান করছিল। ভুগল চন্দ্র বর্মনের অভিযোগ, ঘটনার পরদিন সকালে এ বিষয়ে সালিস ডাকে ইউপি সদস্য পরিমল চন্দ্র বর্মন। অভিযোগ রয়েছে, এ সালিসে লক্ষাধিক টাকার লেনদেনের মাধ্যমে, অভিযুক্ত যুবক রুবেলকে নির্দোষ ঘোষণা করেন, ইউপি সদস্য পরিমল চন্দ্র বর্মন, গ্রাম্য মাতব্বর প্রেম লাল বর্মন ও খোরশেদ আলম। একই সঙ্গে ইউপি সদস্য পরিমল চন্দ্র বর্মনের নেতৃত্বে গাহলী গ্রামের কতিপয় সমাজপতি ভুগল চন্দ্র বর্মনের পরিবারের ওই সদস্যকে এ ঘটনায় দোষি সাবস্ত করাসহ তাদের পরিবারকে একঘরে করে রাখার ঘোষণা দেন। একঘরে করার পর গত ৩০ মার্চ শনিবার রাতে নির্যাতিত ভুগল চন্দ্র বর্মনের আপন মাসি মারা যায়। ভুগল চন্দ্র বর্মনের অভিযোগ, এদিন তার মৃত মাসির সৎকারে অংশ নিতে দেয়নি সমাজপতিরা। ভুগলের স্ত্রী বলেন, একঘরে করার পর সমাজপতিরা তাদের পরিবারের সঙ্গে গ্রামবাসীর কথা বলাবলি বন্ধসহ স্থানীয় মন্দিরে ধর্মীয় কার্যক্রমে অংশ না নিতে তাদের নির্দেশ দেন। তবে সালিসে টাকা লেনদেন এবং একঘরে করার বিষয়টি অস্বীকার করে ইউপি সদস্য পরিমল চন্দ্র বর্মন বলেন, ওই রাতের ঘটনার মতো আর কোন ঘটনা যাতে না ঘটে সেই জন্য সামাজিক ভাবে শাসন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টি তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছেন এবং একঘরে করার ঘটনায় জড়িত ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। নওগাঁ।